পরিবেশের ছাড়পত্র নেই ফেনীর ৬৮ ইটভাটার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফেনীর ৬৮ ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটার কারণে উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলি জমি। ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে পরিবেশ।

পরিবেশ অধিদপ্তর ফেনী কার্যালয়ের তথ্যমতে, ফেনীতে বর্তমানে ১০৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টির পরিবেশ ছাড়পত্র আছে বাকি ৬৮টির ছাড়পত্র নেই।

ছাড়পত্র না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি জাফর উদ্দিন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবের ১০৩টি ইটভাটার মধ্যে ৬০টি উৎপাদনে রয়েছে। ৪৩টি উৎপাদনে নেই। কয়লার দামবৃদ্ধিসহ সামগ্রিক কারণে ইটভাটাগুলো ভালো নেই। বাকিগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

vatsa

তিনি বলেন, একাধিক ইটভাটার পাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠাসহ সরকারের নতুন নীতিমালা মেনে ভাটাগুলো টিকতে পারছে না। এসব কারণেও কোনো কোনো ইটভাটা উৎপাদনে যাচ্ছে না।

এদিকে, অভিযোগ রয়েছে ইটভাটা সংশ্লিষ্টরা অবাধে ফসলি জমির মাটি কাটছেন। জমির টপ সয়েল ইটভাটার চুল্লিতে যাওয়ায় উর্বর নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া মাটি পরিবহনেও পরিবেশর ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, এভাবে মাটি পরিবহনের কারণে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।

ছাগলনাইয়া উপজেলার শান্তিরহাট বাজারের পাশেই দুইটি ইটভাটার অবস্থান। ভাটাগুলোর কাছেই উত্তর কুহুমা উচ্চ বিদ্যালয় ও কুহুমা দাখিল মাদরাসা। পাশেই রয়েছে জনবসতি। এভাবেই আইন লঙ্ঘন করে জেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে চলছে ইট ভাটা। লোকালয়ের এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও ফেনীতে জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। এসব ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

vatsa

আসগর হোসেন নামে স্থানীয় স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, তাদের স্কুলের ১০০ গজের মধ্যেই দুইটি ইট ভাটা। স্কুলে যাতায়াতের পথে ইটভাটার মাটি পরিবহনের গাড়ির দৌরাত্ম এবং ধুলা ও ধোঁয়ার কারণে বেশ ভোগান্তি হয় তাদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই পরিবেশ বিধ্বংসী এসব ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অবৈধভাবে পরিচালিত এসব ইটভাটায় মাটি দেওয়া বন্ধ হলে কৃষক যেমন তার জমিতে ফলাতে পারবে সোনালী ফসল, পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচবে বাসিন্দারা।

জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, পরিবেশের দিক বিবেচনা করেই সরকার পরিবেশবান্ধব ব্লক নির্মাণের জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।

vatsa

তিনি আরও বলেন, যেসব ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে তাদের বিষয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। যারা অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমআরআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।