হত্যার ১৭ বছর পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
হত্যাকাণ্ডের ১৭ বছর পর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল কুদ্দুসকে (৪১) গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) গাজীপুরের বহেরার চালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আব্দুল কুদ্দুস টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাবনাপাড়া গ্রামের শামসুল হক ব্যাপারীর ছেলে।
র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ২০০৬ সালের মে মাসে সাটুরিয়ার বেতুলিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামকে (৩৪) হত্যা করে দেহ ও মস্তক পৃথক স্থানে ফেলে পালিয়ে যান আসামিরা। এ ঘটনায় ওই মাসের ২১ তারিখে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার এসআই আব্দুল জলিল বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা করেন। মামলার পর থেকে আসামি পলাতক ছিলেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড
মামলায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামি আব্দুল কুদ্দুসকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে র্যাব অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও বলেন, ভিকটিম শহিদুল ইসলাম ২০০৪ সালে ধামরাই উপজেলার গোয়াড়ীপাড়ায় একটি অফিস ভাড়া নিয়ে বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সঞ্চয়, ঋণদান এবং ফিক্সড ডিপোজিট কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানে লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছিলো এবং একসময় তাদের একাউন্টে সদস্যদের সঞ্চয়ের বেশকিছু টাকা জমা হয়। সেই টাকা ও প্রতিষ্ঠানটির লোভে আসামিরা শহিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুল কুদ্দুসসহ অন্য আসামিরা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। এক পর্যায়ে তাকে পাত্রী দেখানোর কথা বলে মানিকগঞ্জে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে রাজা মিয়া, সাহেদ, কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার রশি দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ও রুমাল দিয়ে মুখ চেপে ধরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর শহিদুলের গলা কেটে মানিকগঞ্জে ও মাথা টাঙ্গাইলে নিয়ে ফেলে দেয়।
তিনি বলেন, এরপর থেকে আসামি আব্দুল কুদ্দুস পলিয়ে ছিলেন। পালিয়ে থাকা অবস্থায় নিজের মামাত ভাইয়ের নাম, তার বাবার নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে আইডি কার্ড তৈরি করে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানায় হস্তান্তর করা হবে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/আরএইচ/জিকেএস