হারিয়ে গেছে ধানের চিটা পরিষ্কারে কুলোর ব্যবহার

এমদাদুল হক মিলন এমদাদুল হক মিলন , দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২৩
কুলা দিয়ে ধানের চিটা পরিষ্কার করছেন নারীরা

মঙ্গলবার বিকেল ৩টা। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঢেরাপাটিয়া গ্রামে রাস্তার পাশে ধান আর কুলোর ঝনত ঝনত শব্দ ভেসে আসছে। সামনে গিয়ে দেখা যায় কুলো দিয়ে ধানের চিটা পরিষ্কারের কাজ করছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) কয়েকজন নারী। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারাতে বসেছে কুলোর ব্যবহার। তাই এমন দৃশ্য নজর কাড়ছে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা পথচারী ও যাত্রীদের। অনেকে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলছেন।

হারিয়ে গেছে ধানের চিটা পরিষ্কারে কুলোর ব্যবহার

কথা বলে জানা যায়, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঢেরাপাটিয়ার গুচ্ছ গ্রামে তাদের বাস। আমন মৌসুমে ইঁদুরের গর্ত, জমিতে ঝরে পড়া ধান, মহাজনের বাড়ির উঠোনে এবং বাজারে কাজ করে পাওয়া ধান জমিয়ে রেখেছিলেন তারা। ধানগুলো পরিষ্কারের পর কেউ কেউ চাল করবেন আবার কেউ বাজারে বিক্রি করবেন। যা দিয়ে তারা সংসারের অন্য চাহিদা মেটাবেন। তাই রাস্তার ধারে কুলো দিয়ে ধানের চিটা পরিষ্কার করছেন।

হারিয়ে গেছে ধানের চিটা পরিষ্কারে কুলোর ব্যবহার

নারীদের একজন রমরতিও টুকুর। তিনি বলেন, ‘মেশিন দিয়ে গেরস্তদের ধান মাড়াইয়ের চিটাসহ থাকা ধানগুলো আমরা আধাআধি ভাগে পরিষ্কার করে দেই। বাজারে বিক্রি করতে আনা ধান ওঠা-নামার সময় কিছু মাটতে পড়ে যায়। সেই ধান পরিষ্কার করে আধা-আধি ভাগ নেই। ইঁদুরের গর্ত থেকেও ধান সংগ্রহ করি। এসব ধান জমিয়ে রাখার কুলো দিয়ে পরিষ্কার করছি।’

হারিয়ে গেছে ধানের চিটা পরিষ্কারে কুলোর ব্যবহার

অন্য নারীরা বলেন, কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে তাদের আগের মতো ধান কাটা, মাড়াই ও রোপণের সময় ডাক পড়ে না। কাজ অনেক কমে গেছে। ধানগুলো অনেক কষ্টে জোগাড় করা। তারাই কুলো দিয়ে ধানের চিটা পরিষ্কার করেন। সনাতন এ পদ্ধতি তারাই টিকিয়ে রেখেছেন।

হারিয়ে গেছে ধানের চিটা পরিষ্কারে কুলোর ব্যবহার

কথা হয় পথচারী বোচাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রাসেল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন আর আগের মতো কুলো দিয়ে ধান পরিষ্কারে কাজ করতে দেখা যায় না। আগে ধান পরিষ্কারের একমাত্র মাধ্যম ছিল কুলো। এখন সব কাজ হচ্ছে মেশিনের মাধ্যমে। আমি গ্রামের ছেলে হয়েও কতদিন পর এমন দৃশ্য দেখলাম তা বলতে পারবো না। এমন দৃশ্য কার না নজর কাড়ে।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।