বখাটের ভয়ে মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ এসএসসি পরীক্ষার্থীর
লক্ষ্মীপুরে উত্যক্তকারীদের ভয়ে ৩ দিন ধরে মাদরাসায় যেতে পারছে না এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৬)। ভুক্তভোগী নতুন তেওয়ারীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার ছাত্রী।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমটুয়া গ্রামের ওই ছাত্রী ও তার মা এ অভিযোগ করেছেন।
ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার মা মরিয়ম বিবিকে (৮০) মারধর করা হয়। মরিয়ম লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে উত্যক্তকারীরা সোমবার রাতে বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গেছে।
লিখিত অভিযোগ ও পুলিশ জানায়, শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে মাদরাসা থেকে ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরছিল। তার সঙ্গে বৃদ্ধ নানি মরিয়মও ছিলেন। এ সময় চরমটুয়া গ্রামের আরিফ ও সুমন তাদের পথরোধ করেন। এতে বৃদ্ধা তাদেরকে বাধা দেন। পরে অভিযুক্তরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে বৃদ্ধাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিলে ফের মারধরের হুমকি দেন তারা। বিচার চেয়ে ছাত্রীর মা থানায় অভিযোগ করেন। এতে আরিফ, তার বাবা সেলিম, মা আমেনা বেগম, আলী আহমেদ, তার স্ত্রী কুলসুম বেগম ও সুমনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মাদরাসাছাত্রী বলেন, মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে আরিফ ও সুমন আমাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ অশ্লীল কথা বলে। তারা এক মোটরসাইকেলে চলাফেরা করে। ২১ জানুয়ারি উত্যক্ত করলে আমার নানি বাধা দেন। এতে আরিফ-সুমনসহ অন্যরা নানিকে মারধর করে। তারা হুমকি দিয়ে গেছে। সামনে আমার পরীক্ষা কিন্তু তাদের ভয়ে আমি মাদরাসায় যেতে পারছি না।
ছাত্রীর মা বলেন, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে দুইদিন আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আমার মা হাসপাতালে, তাকেও দেখতে যেতে পারছি না। দোকানের সামনে অভিযুক্তরা জড়ো হয়ে থাকে। তারা আমাকেও মারধর করার হুমকি দিয়েছে।
অভিযুক্ত আরিফ ও সুমনকে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। তবে আরিফের বাবা মো. সেলিম জানান, তার ছেলে ফরাশগঞ্জ বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। ওই ছাত্রী তার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। বৃদ্ধা মরিয়মকেও তারা কেউ মারধর করেনি।
অভিযুক্ত আলী আহমেদ বলেন, ঘটনাটি মিথ্যা। অভিযোগকারী মিথ্যা ঘটনা সাজিয়েছে।
নতুন তেওয়ারীগঞ্জ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া বলেন, উত্যক্তের ঘটনাটি ১ মাস আগে ছাত্রীর মা জানিয়েছিল। অভিযুক্ত ফারুককে উত্যক্ত করতে নিষেধ করা হয়েছে। মারধর, হুমকির ঘটনা আমাদেরকে কেউ জানায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ছাত্রীর মায়ের লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।
কাজল কায়েস/এফএ/এএসএম