আধুনিকতার ছোঁয়ায় অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে কামার শিল্প

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩

যুগের বিবর্তন ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে কামার শিল্প। মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বরগুনার কামাররা।

অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাস কৃষকদের ধান কাটার সময়। আর এসময় কামারদের দোকানের লোহা পেটানোর আওয়াজ কানে ভেসে আসতো অনেক দূর থেকে। কৃষকের কাস্তে তৈরিতে দম ফেলার সময় পেতো না কামাররা। সেই আওয়াজ এখন নেই বললেই চলে। বরগুনা পৌরসুপার মার্কেটের পিছনে কামারদের বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায় অলস সময় পার করেছেন অনেকেই।

Borguna3.jpg

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নয়ন কর্মকার বলেন আমি বাবার সঙ্গে ছোট থেকে এই পেশায় আছি। বিগত চার থেকে পাঁচ বছর আগেও বেচা বিক্রি ভালো ছিল। কিন্তু এখন আমাদের কাজের মৌসুম থাকলেও তেমন কাজ নেই। সব কিছুতে মেশিনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। কোনো দিন এক হাজার টাকা বিক্রি হলে আবার দু-তিনদিন কোনো বেচাকেনাই হয় না।

আরও পড়ুন: ডাকাত সরদারের কামড়ে আহত দুই পুলিশ সদস্য

তিনকরি দোকানের কর্মচারী মো. সোহেল বলেন, মহাজন আগে যে বেতন দিত এখন তার অর্ধেক বেতনে এখন কাজ করি। তাছাড়া মহাজনের দোকানে কাজ কমে যাওয়ায় বেতনের বাহিরে কোনো বকশিশ পাই না। অন্য কোনো কাজ জানি না তাই বাধ্য হয়ে এখানেই পরে থাকতে হচ্ছে।

Borguna3.jpg

পঙ্কজ কর্মকার নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, গৃহস্থালি বঁটি, খুন্তি, কৃষকের কাস্তে, নিড়ানি, কোদাল, লাঙলের ফলা, শ্রমিকের কুঠার, শাবল, দা, এগুলো আমরা তৈরি করি। এখন সব কাজে আধুনিক মেশিন ব্যবহার হওয়ায় এগুলোর চাহিদা কমেছে। অনেক সময় এগুলো তৈরির কাঁচামাল কিনতে ঋণগ্রস্ত হতে হয়। ঋণের বোঝায় আমাদের সংসার চালাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছি। দিনদিন এ পেশায় মানুষ আগ্রহ হারাচ্ছে। এ অবস্থায় নতুন অথবা বংশপরম্পরায় কেউ কামার পেশায় আসবে না।

আরও পড়ুন: পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ি থেকে কামারের মরদেহ উদ্ধার

এক সময় বরগুনায় কামারশিল্পের দোকান সম্প্রসারিত হলেও এখন তা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে বরগুনা পৌর শহরে অনেক বেশি দোকান থাকলেও এখন আছে মাত্র ১২ থেকে ১৩ টি।

জেএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।