ইজতেমা ময়দানে মুসল্লির ঢল, ফুটপাতে বসেও চলছে জিকির
তীব্র শীত, কনকনে বাতাস আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে ইজতেমা ময়দানে আসছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত পর্যন্ত টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের ঢল নামতে দেখা গেছে। মুসল্লিদের অনেকে মূল মাঠের খিত্তায় জায়গা না পেয়ে আশপাশের খোলা স্থান ও ফুটপাতে সামিয়ানা টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকে সেখানে বসেই জিকির করছেন।
করোনা মহামারির কারণে আগের দুই বছর ইজতেমা বন্ধ থাকার পর এ বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সারাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দানে পৌঁছেছেন। শুক্রবার ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু কথা থাকলেও দুদিন আগেই সারাদেশে থেকে মুসল্লিা ইজতেমা ময়দানে এসে পড়েছেন। গত বুধবার থেকেই পুরো ইজতেমা ময়দান মুসল্লিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: দেশ-বিদেশের মুসল্লিদের পদভারে মুখর তুরাগ তীর
সরেজমিন ঘুরে বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের বিভিন্ন পথের পাশে ফুটপাতে মুসল্লিদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তারা রাস্তার পাশে পলিথিন টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। মূল প্যান্ডেলে স্থান না পেয়ে মুসল্লিদের অনেকে ফুটপাতসহ আশপাশের উন্মুক্ত স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন।
মুসল্লিদের অতিরিক্ত চাপে তাদের খিত্তায় যেতে না পারায় অনেকে স্টেশন রোড-কামারপাড়া সড়কে বসেছেন। সেখান থেকে তারা ইজতেমার যাবতীয় কাজ করবেন। রান্না করার পরিবেশ না থাকায় অনেকে খাবারের জন্য হোটেল বেছে নিয়েছেন।
ইজতেমার আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি মুসল্লির জমায়েত হতে পারে।
আরও পড়ুন: টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল
নেত্রকোনা থেকে আসা মুসল্লি ইমদাদুল হক জাগো নিউজকে জানান, ২০ জনের জামাত নিয়ে একটি তাবলীগে তারা ইজতেমায় এসেছেন। নির্দিষ্ট খিত্তায় স্থান না পেয়ে রাস্তায় অবস্থান নিতে হয়েছে।
আব্দুল বারেক বলেন, মোবাইলে চার্জ শেষ, অতিরিক্ত মুসল্লির কারণে আমি সঙ্গীদের খুঁজে পাচ্ছি না। আপাতত সড়কে সামিয়ানা টানিয়ে জিকিরে বসেছি। জামাতদের সদস্যদের সঙ্গে যোগযোগ করতে পারলে খিত্তায় চলে যাবো।
শুক্রবার বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের আনুষ্ঠানিক আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আলমি শুরার তত্ত্বাবধানে (জুবায়ের অনুসারী) ইজতেমার মূলপর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর কথা রয়েছে। তবে এর একদিন আগেই বৃহস্পতিবার বাদ জোহর মাওলানা রবিউল হক ও বাদ আসর মাওলানা ফারুকের হেদায়াতি বয়ানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এদিন বাদ মাগরিব বয়ান করেন ভারতের আল্লামা ইব্রাহিম দেওলা আর এর অনুবাদ করেন মাওলানা জোবায়ের। এতে মহান আল্লাহর রাস্তায় সময় দেওয়া ও দাওয়াতে তাবলীগের বিভিন্ন গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে ২ মুসল্লির মৃত্যু
আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতি জহির ইবনে মুসলিম জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় চার হাজার বিদেশি মুসল্লি ইজতেমা মাঠে এসে পৌঁছেছেন। বৃহস্পতিবার পুরো মাঠ মুসল্লিদের দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের স্রোত থাকবে। শুক্রবার জুমার নামাজ ঘিরেও ঢাকা ও আশপাশের মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসবেন।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমকেআর