কুয়াশা-শৈত্যপ্রবাহে নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে ইরি-বোরোর বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। গত বছরের শেষ সপ্তাহ থেকে হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। এরপর কয়েকদিন থেকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইতে থাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এর ফলে ধানের বীজতলার ক্ষতি হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নওগাঁয় ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ৫ বছরে বেড়েছে সরিষা চাষ
টানা কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের ফলে শীত আর ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চারা গাছগুলো লালচে হয়ে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। কৃষকরা বীজতলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা কাজে আসছে না। ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা সময় মতো আবাদ করতে পারবেন কী না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে রাখা হচ্ছে। সূর্যের দেখা মিললে কিছু সময় পলিথিন খুলে রেখে পরে আবারও ঢেকে রাখা হয়।
নিয়ামতপুর উপজেলার ভাতরন্ড গ্রামের কৃষক আয়েন উদ্দিন বলেন, দুই বিঘা জমিতে ধানের বীজতলা তৈরি করেছি। বীজ বপনের তিনদিন পর থেকে কুয়াশা ও বাতাস। কয়েকদিন থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। চারা হলুদ হয়ে শুকিয়ে কিছুটা মরে গেছে। পরে আট হাজার টাকা খরচ করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আগাম শিমে লাভবান নওগাঁর চাষিরা
একই গ্রামের হুমায়ন আহমেদ বলেন, একমণ ধানের বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছি। আবহাওয়া ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা হয়েছে। কিছুটা নষ্ট হলেও পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখায় রক্ষা পাচ্ছি। দিনে সামান্য সূর্যের দেখা মিললে পলিথিন খুলে রাখা হয়। আবারও বিকেলে ঢেকে রাখা হয়। কয়েকদিন ঢেকে রাখা হলে চারা গজিয়ে যাবে। তখন আর সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, এলাকার অনেকেই এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। এবার পাঁচবিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবো।
সদর উপজেলার বক্তারপুর গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে জমি রোপণ শুরু হবে। চারার বয়স এক মাস কয়েকদিন। তারপরও চারা হলুদ হয়ে গেছে। চারা যদি নষ্ট হয়ে যায় জমি রোপণে দেরি হবে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় কাজে আসছে না কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, শৈত্যপ্রবাহে বীজতলার কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে বীজতলা বেশি পরিমাণে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার তেমন ব্যত্যয় হবে না। বীজতলা ভালো রাখার জন্য কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ বছর বোরো মৌসুমে ব্রি-৮৯ ধানকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ধানের জীবনকাল বেশি এবং ফলনও ভালো। এছাড়া অন্য জাতের ধানও আবাদ করা হচ্ছে।
আব্বাস আলী/এমআরআর/জিকেএস