ভাসানচরে ১০ মাসে ৫২৫ রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম
নোয়াখালীর হাতিয়ার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১০ মাসে ৫২৫ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। এদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছে ৫০০ শিশু। বাকি ২৫ শিশু জন্ম নিয়েছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে।
রোববার (৮ জানুয়ারি) ভাসানচর শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জাগো নিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ভাসানচরে ২০২২ সালের মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩২ জন, মে’তে ২৫ জন, জুনে ৪১ জন, জুলাইয়ে ৪০ জন, আগস্টে ৫০ জন, সেপ্টেম্বরে ৮৫ জন, অক্টোবরে ৭৭ জন, নভেম্বরে ৮১ জন ও ডিসেম্বরে ৮১ শিশু জন্মগ্রহণ করে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভাসানচরে গত ১০ মাসে জন্ম নেওয়া এসব নবজাতকের মধ্যে শতকরা ৪.২৫ শতাংশ অস্ত্রোপচার এবং ৯৫.৭৫ শতাংশ নরমাল ডেলিভারিতে জন্মগ্রহণ করে। তবে, ২০২২ সালের মার্চ মাসের আগে জন্ম নেওয়া নবজাতকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রথম ভাসানচরে আসেন। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ভোরের দিকে ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা দম্পতি মোহাম্মদ কাশেম ও রাবেয়া খাতুনের ঘরে জন্ম নেয় একটি ছেলে শিশু। ওই শিশুটিই ভাসানচরে জন্ম নেওয়া প্রথম নবজাতক।
নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ও ভাসানচরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটর ডা. সোহরাব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ভাসানচরে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক দুজন মেডিকেল অফিসার, তিনজন সিনিয়র স্টাফ নার্স, দুজন প্যারামেডিকস, দুজন মিডওয়াইফ, দুজন এমএলএসএস, দুজন সিএইচসিপি, একজন বাবুর্চি ও দুজন সিকিউরিটি গার্ড সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, হাইফা, ফ্রেন্ডশিপ, আরটিআই ও ব্র্যাকের কর্মীরাও রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
২০২২ সালে ভাসানচর ২০ শয্যার হাসপাতালটিতে নরমাল ডেলিভারিতে ১০১ এবং সিজারিয়ান অপারেশনে ২৩ নবজাতকের জন্ম হয়।
ডা. সোহরাব হোসেন আরও জানান, ভাসানচরে গর্ভবতী নারীদের জন্য সবধরনের স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা আছে। কোনো রোগীর যদি সেখানে সেবা দিয়ে সুস্থ করা সম্ভব না হয়, তবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের রিফিউজি ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জিকেএস