২০ কোটি টাকার সেতু আছে, সংযোগ সড়ক নেই
শেরপুরের শ্রীবরদীতে নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় চালু হয়নি প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে মৃগী নদীর ওপর নির্মিত গড়খাই সেতু। এতে ঝুঁকি নিয়ে পুরোনো সেতু দিয়েই যাতায়াত করছেন যানবাহন চালক ও পথচারীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধ না করেই সেতু নির্মাণ করায় এ জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, সব জটিলতা কাটিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শেরপুরের আখেরমামুদের বাজার থেকে লঙ্গরপাড়া হয়ে শ্রীবরদী উপজেলা সড়কটির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ শেষ হয়। ১৪.৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই সড়কের লঙ্গরপাড়া এলাকায় মৃগী নদীর ওপর প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৪.২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ শেষ হয় গত বছরের শেষ দিকে।
গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জ, কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজীবপুর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহগামী যানবাহন চলাচল করে থাকে। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতির ফলে জমির মূল্য পরিশোধ না করায় এতদিন সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোটরসাইকেল চালক ফিরোজ মিয়া জানান, আগের সরু ও ভাঙা রাস্তা এবং সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই নতুন সেতুটি দ্রুত চালু করা প্রয়োজন।
তহিজুল ইসলাম নীরব নামের একজন বলেন, ‘আমি লঙ্গরপাড়া বাজারের একটি স্কুলে চাকরি করি। প্রতিদিনই এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। অথচ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করে ফেলে রেখেছে। একটুখানি রাস্তার জন্য সেটি চালু হচ্ছে না।’
অটোরিকশাচালক আবুল কালাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে গাড়ি বারে বারে নষ্ট হয়ে যায়। খুব রিস্ক নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যাত্রীদেরও কষ্ট হয়।
স্কুলছাত্রী আশা মনির ভাষ্য, ‘প্রতিদিন এই ভাঙা রাস্তায় ভ্যানগাড়িতে করে স্কুলে যাই। দিনে ৩-৪ বার যাতায়াত করতে হয়। খুব ভয় করে। রাস্তা হয়ে গেলেই নতুন সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে পারতাম।’
জানতে চাইলে শেরপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সব জটিলতা শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জন্য আট কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির সেতুর সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
এসআর/জিকেএস