মমেকে প্রতিদিন ১০ নবজাতক ও শিশুর মৃত্যু
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ও এনআইসিইউতে প্রতিদিন গড়ে ১০ জনের বেশি শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে। তবে এই মৃত্যুহারকে স্বাভাবিক বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ শয্যার বিপরীতে মোট রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯২৯ জন। এরমধ্যে শিশু ওয়ার্ডে মোট ৬০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ৩১৫ জন। নবজাতক ওয়ার্ডে ৫০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি ১৪৮ জন।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ২ জন ও নবজাতক ওয়ার্ডে মারা গেছে ৯ জন। বাকিরা হাসপাতালের অন্যান্য ওয়ার্ডে বিভিন্ন রোগে মারা গেছেন।
৩০ ডিসেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৭ দিনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ৮৬ জন নবজাতক ও শিশু মারা গেছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. গোলাম কিবরিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ছয় জেলা ছাড়াও গাজীপুর, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়ে থাকে। যে কারণে ১ হাজার শয্যার এ হাসপাতালে বেশিরভাগ সময়ই তিনগুণের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এসব রোগীদের মধ্যে অনেকেই থাকে খুবই সংকটাপন্ন। বিশেষ করে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা বেশিরভাগ রোগীই থাকে সংকটাপন্ন। যে কারণে নবজাতকদের মৃত্যুর হার বেশি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শীতকালে ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দিলেও এই ঋতুতে মানুষের অন্যান্য রোগ কম হয়। যে কারণে রোগী ভর্তির সংখ্যা এখন তুলনামূলক কম। সম্প্রতি ময়মনসিংহ অঞ্চলে শীত বাড়লেও এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেলে শীতজনিত রোগীর অস্বাভাবিক কোনো চাপ নেই। শিশু ওয়ার্ড ও নবজাতক ওয়ার্ডেও গত এক সপ্তাহ ধরে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম রোগী ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল ছাড়া বিভন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে এখানে জটিল রোগে আক্রান্ত শিশু ও সংকটাপন্ন নবজাতকদের নিয়ে আসা হয়। দেশের অন্তত ৩ কোটি মানুষ চিকিৎসা সেবার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ব্যবহার করেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, শীতজনিত রোগের কোনো বিশেষ প্রকোপ এখানে নেই। বরং স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে রোগী ভর্তি কিছুটা কম।
নবজাতক মৃত্যু বিষয়ে পরিচালক বলেন, দেশের নানা প্রান্তে এখনো অনিরাপদ প্রসব হয়। সেসব অঞ্চলের অনেক নবজাতক জন্মের পরপর সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়লে এখানে নিয়ে আসে। যে কারণে নবজাতক মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এরজন্য বিভিন্ন অঞ্চলে সচেতনতা বাড়াতে আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।
এফএ/জেআইএম