ক্যানসারে স্বামীর মৃত্যু, ছেলেকেও হারানোর আশঙ্কায় ইসমোতারা
ছয় বছর বয়সী শিশু ইছার যখন পাড়ার শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার কথা, স্কুলে যাওয়ার কথা; তখন সে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। শিশুটির চিকিৎসায় সাহায্যের হাত বাড়ানোর আকুতি জানিয়েছে তার পরিবার।
শিশু ইছা মিয়া রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা কুর্শা ইউনিয়নের খিদ্রাউপঞ্চী গ্রামের দিনমজুর ইসমাইল হোসেনের নাতি ও ইসমোতারা বেগমের একমাত্র ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসমোতারা বেগমের স্বামী আফসার আলী ২০১৮ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামীর নিজস্ব বসতভিটা না থাকায় একবছর বয়সী শিশু ইছা মিয়াকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন ইসমোতারা। গতবছর ইছা মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় শিশুটির ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে।
কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন বলেন, শিশু ইছা ম্যালিগন্যান্ট নন-হজকিনস লিম্পোমায় ভুগছে। এটা একধরনের ব্লাড ক্যান্সার। চিকিৎসায় ভালো হয়, তবে ব্যয়সাপেক্ষ।
সন্তানের চিকিৎসার ব্যয়ভার নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বামীহারা ইসমোতারা। তিনি বলেন, ‘স্বামী হারিয়ে ছেলেকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু ক্যানসারে আক্রান্ত স্বামীর মতো হয়তো ছেলেকে হারাতে হচ্ছে। আমার ছেলেটা বাঁচতে চায়। কিন্তু অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। বিনা চিকিৎসায় আমার বুকের ধনটা যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ছেলেকে বাঁচাতে হলে কেমোথেরাপি ও দামি ইনজেকশন দিতে হবে। এতে খরচ হবে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকা, যা আমার পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব।’
শিশুটির নানা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে পরিবারের খাবার জোটে। নাতির চিকিৎসার জন্য বাড়িভিটার এক শতাংশ জমি বিক্রি করে গতবছর ডাক্তার দেখিয়েছি ও পরীক্ষা করিয়েছি। এখন আমারে চলে না, নাতির চিকিৎসা করাবো কী করে?’
খিদ্রাউপঞ্চী গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, শিশু ইছার নানার পারিবারিক অবস্থা ভালো না। আমরা গ্রামবাসী কিছুটা সহযোগিতা করেছি, তা অপ্রতুল। শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।
জিতু কবীর/এসআর/এমএস