থার্টিফার্স্টের বনভোজন থেকে ফিরে স্কুলছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু
পাবনার ঈশ্বরদীতে থার্টিফার্স্ট নাইটে বনভোজন থেকে ফিরে রোহান হোসেন (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু হয়।
রোহান উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া থানাপাড়া এলাকার মিন্নু মিয়ার ছেলে। সে সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয়রা জানান, থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে শনিবার রাতে বাড়ির পাশে বন্ধুদের সঙ্গে বনভোজনে অংশ নেয় রোহান। পাশাপাশি আরও কয়েকটি বনভোজনের আয়োজন ছিল। একপর্যায়ে সাউন্ড বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে রাত ১২টা ২০ মিনিটে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এর কিছুক্ষণ পর রোহান বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
তবে বনভোজনে অংশ নেওয়া আসিফ (২০) নামে এক তরুণ দাবি করেন, মারামারির ঘটনার সঙ্গে রোহান জড়িত নয়। মারামারির সময় রোহান ঘটনাস্থলে ছিল না। আমরা তার মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পারছি না।
রোহানের ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ধারণা, রোহানকে যারা রাতে বনভোজনের জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তারা তাকে বিষাক্ত কিছু খাইয়েছিল। রোহান রাত ১২টা ২০ মিনিটে যখন বাড়িতে আসে তখন সে বমি করছিল। তাকে হাসপাতালে গিয়ে গেলে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, রোহান কখনো একটি সিগারেটও খায়নি। তাকে নেশাজাতীয় কোনো কিছু খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম জাগো নিউজকে বলেন, রোহানের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। তাৎক্ষণিক তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার জাগো নিউজকে বলেন, আমি নিজে দেখেছি রোহানের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। কোনো কিছুর আঘাতে মারা গেলে অবশ্যই শরীরে চিহ্ন থাকতো। বিষয়টি নিশ্চিত হতে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। কীভাবে তার মৃত্যু হলো বুঝতে পারছি না।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, রোহানের শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
শেখ মহসীন/এমআরআর/জেআইএম