গ্রামের নাম ৯৯৯!
৯৯৯ বা ট্রিপল ৯। নম্বরটি সবার জানা। এই নম্বরে কল দিলে তাৎক্ষণিক যে কোনো সেবা পাওয়া যায়। তবে কোনো গ্রামের নাম যদি ৯৯৯ হয় তাহলে কেমন শোনাবে! শুনতে অবাক লাগলেও সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার ৫২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামের ঠিকানা হিসেবে এই নম্বরটি ব্যবহার করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৫ মার্চ প্রকাশিত তালিকায় এমন ভুলটি হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। অনেকের গ্রামের নাম সংশোধন হয়েছে। কারও কারও এখনো হয়নি। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ে এত শিক্ষিত মানুষ থাকতে সমন্বিত তালিকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধার ঠিকানা ভুল হয় কীভাবে?’
বৃন্দাবন নগর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মিয়া বলেন, ‘আমার গ্রামের নামের জায়গায় ৯৯৯ লেখা ছিল। আমি অনেক কষ্ট করে এটা সংশোধন করেছি। কিন্তু অনেকের গ্রামের নাম এখনো সংশোধন হয়নি। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’
সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মন্তাজ আলী বলেন, ‘এটা সত্যিই দুঃখজনক যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঠিকানা ভুল প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। উপজেলা কমান্ডারের মাধ্যমে সংশোধনের জন্য জন্য আবেদন করেছি।’
সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ বলেন, ‘অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামের নাম ভুল হয়েছে। সবাই সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। এই ভুলের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের ৫১ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্যা দূর হচ্ছে না। সম্প্রতি নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে সমন্বিত তালিকা নিয়ে। সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা প্রকাশ করেছে সেটাতে দেখা গেছে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বায়ী ঠিকানা গ্রামের জায়গায় ৯৯৯ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা সত্যিই খুব দুঃখজনক।’
জানতে চাইলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্যসন্তান। তাদের এ সমস্যাটি আমার আগে জানা ছিল না। আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে কথা বলে দ্রুত সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/জিকেএস