রাস্তার পাশেই ময়লার স্তূপ, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ পথচারী-এলাকাবাসী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বাগেরহাট
প্রকাশিত: ০৯:১৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

বাগেরহাট সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা এলাকায় সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা হচ্ছে। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা এনে ফেলা হয় সেখানে। রাস্তার পাশের এ ময়লার স্তূপ থেকে বের হওয়া উৎকট দুর্গন্ধে চরম বিপাকে পথচারীসহ পৌরবাসী।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুন ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাগেরহাট পৌরসভার আবর্জনা অপসারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ডাম্পিং প্লেস নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তবে সাড়ে তিন বছরে জমি অধিগ্রহণ ছাড়া দৃশ্যমান কোনো কাজ হয়নি। খোলা জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, শিগগির পরিবেশবান্ধব গারবেজ সেন্টারের কাজ শুরু করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ পোলঘাট সড়কের পাশে মাঝিডাঙ্গা এলাকাজুড়ে ময়লার স্তূপ। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা এনে সেখানে ফেলা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে দিনের পর দিন পৌরসভা থেকে এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। নাকে কাপড় ছাড়া কিংবা নিশ্বাস বন্ধ না করে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল একেবারে অসম্ভব। ময়লার স্তূপ প্রতিনিয়ত যে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে তাতে দূষিত হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি পথচারীরা নাক ঢেকে চলাচল করতে পারলেও মাঝিডাঙ্গা এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটারের মধ্যে যারা বসবাস করেন তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা।

ওই পথ দিয়ে নিমমিত চলাচল করা রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন কাজের জন্য এই পথ দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এখানে ময়লা ফেলায় পরিবেশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। কারও পক্ষে নিশ্বাস নিয়ে এ রাস্তা পার হওয়া সম্ভব নয়। আমরা নাক বন্ধ করেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মাঝিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা কামরুন্নাহার বলেন, এই এলাকা এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। দুর্গন্ধে খুবই কষ্ট হয় আমাদের। বৃষ্টির সময় ময়লাযুক্ত পানি রাস্তায় চলে আসে। ওই সময় আমাদের বাড়িঘরেও ময়লা প্রবেশ করে। তখন বাড়িতে থাকা দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়।

শেফালি বেগম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। তাতেও গন্ধ যায় না। খুবই অসহায় লাগে। মনে হয় ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যাই।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় স্কুল শিক্ষিকা জামিলা খাতুন বলেন, আমাকে এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। বাগেরহাট শহরে এর চেয়ে আর নোংরা ও দুর্গন্ধ যুক্ত যায়গা কোথাও নেই। রাস্তার পাশে খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের শরীরে নানা ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে বাগেরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, পৌরসভা নিজস্ব আইনে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। তারাই এর ব্যবস্থা নেবে। তবে কেউ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা পৌরসভাকে চিঠি দেব।

বিজ্ঞাপন

বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, পৌরসভার আবর্জনা অপসারণ এবং উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা পাঁছ একর জমি কিনেছি। ওই জমির চারদিকে উঁচু দেওয়াল দিয়ে পৌরসভার বর্জ্যকে আধুনিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হবে। এখানে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, কম্পোস্ট সার প্ল্যান্ট, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। দুই মাসের মধ্যে এসব কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে।

তিনি আরও বলেন, পৌরসভার আবর্জনার দুর্গন্ধ যাতে না ছড়ায় সেজন্য নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হয়। এছাড়া রাস্তার ওপর ময়লা এলে তা ভেতরে নিয়ে ফেলা হয়। সব মিলিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতে কষ্ট না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করা হচ্ছে। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট চালু হলে এসব সমস্যা থাকবে না।

এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।