আওয়ামী লীগের সভাপতি হতে চান বিএনপির ডোনার
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ১৭ ডিসেম্বর। এ সম্মেলনে বিএনপির ডোনার হিসেবে পরিচিত আবু ইউসুফ জাকারিয়া (পালো) সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সম্মেলনকে ঘিরে সভাপতি পদে চারজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচ প্রার্থী তৃনমূলে কাজ করছেন। ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা এলাকা। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হবে বিধায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন প্রার্থীরা। সম্মেলনে ৯টি ওয়ার্ডের ২২৭ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, আবু ইউসুফ জাকারিয়া (পালো) পারিবারিক ভাবে বিএনপি পরিবারের সক্রিয় সদস্য। ২০০২ সালে ঢাকার একটি আইটি কোম্পানির চাকরি ছেড়ে এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তার ভাষ্যমতে, চাকরি করে তিনি অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। এখন এলাকায় থেকে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। পৌর এলাকার ধানগড়া বাজারে গড়ে তুলেছেন সেন্টার পয়েন্ট নামের একটি মার্কেট। জমিজমা কিনেছেন অনেক। এ সম্পদ ধরে রাখতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সখ্যতা রাখেন তিনি।
উপজেলা বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম ও দলীয় কর্মসূচিতে প্রচুর অর্থ ডোনেশন দেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএনপির রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশেও মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হওয়ার জন্য কতিপয় নেতাকে ম্যানেজ করে কয়েক মাস আগে ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য পদ বাগিয়ে নেন তিনি। সে সুবাদে তিনি এখন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক ত্যাগী নেতা জানান, কোনোদিন তাকে জয় বাংলা শ্লোগান দিতে দেখলাম না। উল্টো উপজেলা বিএনপির বড় ডোনার জাকারিয়া। তিনি যদি পৌরসভার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেন তাহলে পৌরসভার ত্যাগী প্রার্থীদের অবমূল্যায়ন হবে। আমরা চাই প্রকৃত আওয়ামী লীগকে দল মূল্যায়ন করুক।
রায়গঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আকতার (বাবলু) জাগো নিউজকে বলেন, এলাকায় বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে আবু ইউসুফ জাকারিয়া (পালো) পরিচিত। সম্প্রতি বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশেও নাকি মোটা অঙ্কের টাকা ডোনেট করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
অপরদিকে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী আবু ইউসুফ জাকারিয়া (পালো) নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন সদস্য দাবি করে জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপির কোনো পদ-পদবীতে ছিলাম না। তবে আমার এক ভাই ও কিছু আত্মীয়-স্বজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাদী আলমাজী জিন্নাহ জাগো নিউজকে বলেন, পালো আগে আওয়ামী লীগ করেননি। তবে সম্প্রতি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন। আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে দেখতে চাচ্ছি কাউন্সিলররা ত্যাগী আওয়ামী লীগ নাকি ডুপ্লিকেট আওয়ামী লীগকে নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ জাগো নিউজকে বলেন, আবু ইউসুফ জাকারিয়ার (পালো) সম্পর্কে দলের মধ্যে বেশ বিতর্ক রয়েছে। তবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরএইচ/জেআইএম