শিক্ষার্থীদের অজান্তে একাদশে ভর্তি করে নিলো কলেজ কর্তৃপক্ষ!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

আবেদনকারীর অজান্তেই অনলাইনে ভর্তির অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না শিক্ষার্থী।

এ নিয়ে রোববার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার। ওই বিদ্যালয়েই ভর্তি হয়ে গেছে তার। এমনকি ভর্তি ফিও জমা হয়েছে। মোবাইল ফোনে এমন একটি বার্তা পেয়ে হতবাক হন তিনি।

সাদিয়া বলেন, ‘আমি বা আমার পরিবারের কেউ অনলাইনে ভর্তির আবেদন কিংবা টাকা জমা দেইনি। ৮ ডিসেম্বর আমার মোবাইল ফোনে মেসেজ এসেছে ভর্তির আবেদন সাকসেসফুল এবং ভর্তির জন্য ১৫০ টাকাও জমা হয়ে গেছে। ওই আবেদনে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নামটি ফার্স্ট চয়েজসহ দূর-দূরান্তের অন্যান্য কলেজের নাম দেওয়া হয়েছে।’

সাদিয়া আরও বলেন, ‘পরে স্থানীয় কম্পিউটার দোকানে অনলাইনে আমার পছন্দের কলেজের নাম উল্লেখ করে আবেদন করতে গেলে আবেদনটি রিসিভ হচ্ছিল না। আগের আবেদনটিও বাতিল করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি আমার বাবাসহ স্কুল প্রধান মো. সানোয়ার হোসেনের কাছে গেলে তিনি বলেন, দুটি বছরইতো, থাক-না এ প্রতিষ্ঠানেই। আমাদের ছাত্রী আমাদের এখানেই থাক।’

একই অভিযোগ ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাস করা আজিম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৩.০৬ নিয়ে পাস করেছি। ওই প্রতিষ্ঠানের কলেজ শাখায় ভর্তির জন্য অনলাইনে কোনো ফি দেইনি এমনকি ভর্তির আবেদনও করিনি। কিন্তু ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম উল্লেখ করে আমার ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়েছে। ওই তার আবেদন বাতিল এবং বিনা অনুমতিতে আবেদনের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’

ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসিতে পাস করা মাহফিল হোসেন বলেন, ‘আমার অভিভাবক বিষয়টি কেন করা হয়েছে জানতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ অশালীন আচরণ করেন। আমাকে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে দেবে না বলে জানায়।’

শুধু তিন শিক্ষার্থী নন, একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পাস করা তানিয়া আক্তার, মুসফিকুর রহমান, নুসরাত জাহান নাবিলা, মহিন হায়দার, আশিক হোসেন, আজিম হোসেন, শারমিন আক্তার মিম, ফাতেমা আক্তারসহ আরও অনেকে একই অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষক মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘স্কুলের কেউ তথা আমি নিজে এসএসসি উত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করে দেইনি। যেসব শিক্ষার্থী আমাদের কাছে আবেদন করে দেওয়ার জন্য এসেছে শুধুমাত্র তাদেরই সহযোগিতা করেছি মাত্র। তবে আমরা কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে বুঝিয়ে অনুরোধ করে আমাদের কলেজে আবেদনের জন্য বলেছি।’

এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতে এভাবে আবেদন দণ্ডনীয় অপরাধ। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. আমিনুল ইসলাম/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।