চট্টগ্রামে মিটারে চলছে না সিএনজি অটোরিকশা


প্রকাশিত: ০৬:৫৮ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরনগরীতে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণের পর প্রথম কয়েকদিন বেশ তোড়জোর দেখিয়ে ছিল নগর পুলিশ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারো পুরোনো চিত্রে সিএনজি অটোরিকশা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালক মিটার অনুযায়ী ভাড়া নিতে আগ্রহী নন। হয় তারা মিটার বন্ধ রাখেন, নয়তো মিটারে ওঠা ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি করেন।

এছাড়া বেশির ভাগ সিএনজি’র মিটার নষ্ট। একই স্থানে মিটারে যাওয়ার পর দু’ধরনের বিল উঠে সিএনজির মিটারে। নগরীর সিটি গেইট থেকে বায়েজিদ থানার সামনে যাওয়ার পর এক সিএনজিতে বিল উঠে ৭৬ টাকা। পরের দিন অন্য সিএনজিতে একই স্থানে গেলে বিল উঠে ১৮০ টাকা।

গত ১ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে মিটারে অটোরিকশা চলাচল বাধ্যতামূলক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল সিএমপি। কিন্তু পরবর্তীতে মিটার সংযোজনের সময় এক মাস বাড়িয়ে দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি সিএনজি অটোরিকশার চালক-মালিক এবং বিআরটিএ’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠকে তারা ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মিটার সংযোজনের অঙ্গীকার করেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিটার সংযোজনের সময় আর বাড়ানোর সময় নেই।

সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মিটারে অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে অনড় অবস্থানের কথা জানায় পুলিশ। পরে দু’দিনের অভিযানে মিটার না থাকায় শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন অটোরিকশা জব্দ করে পুলিশ। কিন্তু এরপর থেকে তাদের আর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

এদিকে সিএনজি অটোরিকশা চালকরা তাদের পুরোনো পদ্ধতিতে ফিরে গেলেও বন্ধ হয়ে গেছে পুলিশ ও বিআরটিএ’র অভিযান। এর আগে প্রথম দফায় ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় প্রজ্ঞাপন জারি করে চট্টগ্রাম মহানগর ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। প্রথম কয়েকদিন বেশ তোরজোর দেখিয়ে মিটার চালু রাখার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণা দিলেও সড়কে তার প্রতিফলন নেই, তাই যাত্রীদের আগের দুর্ভোগই ফিরে এসেছে।

তবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন, অর্থ ও ট্রাফিক) একেএম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। সিএনজি অটোরিকশায় যাতে যাত্রীরা মিটারে যেতে পারেন তার জন্য একটি বিশেষ টিমও কাজ করবে, এ লক্ষে কাজ চলছে। শুধু মাত্র ফোর্স দিয়ে কাজ হবে না। জনগণকেও সচেতন হতে হবে।’

এদিকে কম দূরত্বে যেতে চালকদের অনীহা এবং মিটারের পরিবর্তে চুক্তিতে যেতে বাধ্য করা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে প্রতিদিনই নগরীর চালকদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়াচ্ছেন যাত্রীরা।

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রামে এক সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশায় মিটার কার্যকর হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সিএনজি অটোরিকশায় মিটার কার্যকরের সময় দুই দফা বাড়িয়ে এ বছরের ১লা ফেব্রুয়ারী নির্ধারণ করা হয়। প্রথম দু’দিনের তোড়জোড়ের পরে এ নিয়ে তাদের আর কোনা পদক্ষেপ চোখে পরছে না। সিএনজি অটোরিকশায় মিটার কার্যকর করতে না পারাকে সরকারের ব্যর্থতা দাবি করেন তিনি ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর অধিকাংশ অটোরিকশাই চলছে মিটারের পরিবর্তে চুক্তিতে। এমনকি দু’দিনের পুলিশি অভিযানে মামলা করা হয়েছে এমন অটোরিকশাও আবারো রাস্তায় নেমেছে। মামলার শর্ত অনুযায়ী ৭ দিনের মধ্যে জরিমানা দিয়ে তাদের মিটার লাগানোর কথা রয়েছে। কিন্তু পুলিশি তৎপরতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই সব অটোরিকশাও ফের মিটার ছাড়াই রাস্তায় নেমেছে।

জেএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।