সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ৭৪ নবজাতকের মৃত্যু
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডে ৯৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া জাগো নিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে নবজাতক ওয়ার্ডে (এসআইসিইউ) এক হাজার ৩৫৩ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ৭৪ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের নতুন ভবনের ছয়তলার ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছে দুই হাজার ৮৭৭ শিশু। এরমধ্যে মারা গেছে ২২ জন।
দুপুরে হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক ওয়ার্ডে ৫০ শয্যার বিপরীতে ২০৪ নবজাতককে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় অভিভাবকরা অপেক্ষা করছেন।
হাসপাতালের নতুন ভবনের ছয়তলার ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৬০টি। সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ৪৪১ জন শিশুকে।
গাজীপুরের মাওনা থেকে ১০ মাস বয়সী শিশু আনাসকে নিয়ে এসেছেন ইউসুফ আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সম্প্রতি বাচ্চার পাতলা পায়খানা ও সর্দি-জ্বর হয়। তিনদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আমার বাচ্চা এখন আগের তুলনায় ভালো আছে।’
ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে আসা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাচ্চার বয়স ১১ মাস। সে বেশ কয়েকদিন ধরে বমি ও পাতলা পায়খানায় ভুগছে। তাই এখানে এনেছি।’
ময়মনসিংহ সদরের অস্টধর ইউনিয়ন থেকে ছয়মাস বয়সী শিশু মাহদীকে নিয়ে এসেছেন মনিরুজ্জামান। সেও সর্দি, কাশি ও পাতলা পায়খানায় ভুগছিল। হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখন অনেকটা সুস্থ। মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আজই আমার বাচ্চার ছুটি দিয়ে দেবে।’
হাসপাতালের নবজাতক (এনআইসিইউ) বিভাগের চিকিৎসক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গড় হিসেবে ঢাকা-সিলেটের তুলনায় ময়মনসিংহে নবজাতক মৃত্যুর হার অনেক কম। যেসব নবজাতক মারা যাচ্ছে তাদের বেশিরভাগ জন্মগত সমস্যার কারণে। বাড়িতে এবং বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে ডেলিভারি করানো নবজাতকদের এই সমস্যাটা বেশি। তিনি বলেন, হাসপাতালে মৃত্যুর ৯০-৯৫ শতাংশ শিশু বাইরে থেকে আসা।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, শয্যার তুলনায় নবজাতক এবং শিশু ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় প্রতিনিয়ত সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও আমরা কোনো রোগীকে তাড়িয়ে না দিয়ে ভর্তি করে সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/জেআইএম