স্কুলে এসে হাজিরা খাতায় সই করেই চলে যান প্রধান শিক্ষিকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০২২

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পাঠদান না করিয়েই বেতন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার ভানুডাঙ্গা গুচ্ছগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা জোরিনা খাতুন নিয়মিত বিদ্যালয়ে গিয়ে শুধু হাজিরা খাতায় সই করে বাড়িতে চলে যান। শুধু তাই নয়, সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকায় কোনো উপকরণ না কেনারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এদিকে, সম্প্রতি বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর তিনি বিদ্যালয়ে আসছেন না বলে জানা গেছে।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি উপজেলার শেষপ্রান্ত বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার লাগোয়া এলাকায় অবস্থিত। ফলে শিক্ষা বিভাগের কোনো কর্মকর্তা সেভাবে তদারকি করেন না। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষিকা জোরিনা খাতুন শিক্ষার্থীদের না পড়িয়েই বেতন নেন বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া সরকারি স্লিপফান্ড, প্রাক-প্রাথমিকের কক্ষ সজ্জিতকরণসহ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সরঞ্জামের অর্থও আত্মসাৎ করেন তিনি।

জানতে চাইলে এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও) হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষিকার আগমন প্রস্থানের বেশ সমস্যা রয়েছে। তবে ওই শিক্ষিকাকে বারবার বললেও তিনি সংশোধন হননি।

স্থানীয় আফজাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে শিক্ষকরা মাঝেমধ্যে পতাকা টানানো অবস্থায় রেখেই চলে যায়। কোনোদিন এ পতাকা শিক্ষার্থীরা নামিয়ে রেখে দেয়। সিংহভাগ সময় ওই অবস্থাতেই থাকে।

প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিত পাঠদান করান কী না জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, তিনি স্কুলে এসে দুপুরের আগেই চলে যান।

এক শিক্ষার্থী বলে, বড় ম্যাডাম স্কুলে এসে ১১টা-১২টার দিকেই বাড়িত যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সহকারী শিক্ষক জাগো নিউজের কাছে অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় সই করেই চলে যান। তবে তারা কিছু বলতে পারেন না। তিনি রেগে যান। এ বিষয়ে এটিও এবং টিওকে বলেও কোনো লাভ হয়নি।

তবে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষিকা জোরিনা খাতুনের মোবাইলফোনে কয়েকবার কল দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া রোববার তিনি স্কুলেও আসেননি।

এ প্রসঙ্গে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি জানতাম না। প্রতিষ্ঠানটিতে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।