হত্যার ৩৩ বছর পর রায়, সাবেক মেয়রসহ ৬ আসামির যাবজ্জীবন
কক্সবাজারের মহেশখালীর চাঞ্চল্যকর খাইরুল আমিন সিকদার হত্যার ৩৩ বছর পর রায় হয়েছে। রায়ে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম ও মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার আজমসহ ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মহেশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম, তার ভাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী জহির উদ্দীন, নাছির উদ্দীন, তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম ওরফে শামসু চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট হামিদুল হক ও সাধন দাশ।
রায় ঘোষণার সময় সাধন ছাড়া বাকি আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৩২ বছর আগে মহেশখালী পৌরসভায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জাতীয় পার্টির তৎকালীন নেতা নুরুল আমিন। তবে দীর্ঘদিন নানা জটিলতায় মামলার অগ্রগতি ছিল না। সম্প্রতি আমরা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেই। মামলায় মোট ৩৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে অভিযুক্ত ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। আর ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন জমে থাকা আলোচিত মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় মহেশখালী গোরগঘাটা এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে নির্মমভাবে খুন হন কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, তৎকালীন জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা নুরুল আমিন। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই মাহমুদুল হক মহেশখালী থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে একই বছর ২২ নভেম্বর ২৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেন তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।
২০০৩ সালে ২৭ জুলাই আদালত অভিযোগ গঠন করেন। ৩৩ বছর আগের আলোচিত খাইরুল আমিন হত্যা মামলায় দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর রায়ের দিন ধার্য ছিল ১০ নভেম্বর। আগে বেশ কয়েকবার রায়ের তারিখ পিছিয়েছিল আদালত। আসামিদের কারাগারে পাঠানোর পর ২৪ নভেম্বর চূড়ান্ত রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে সেদিনও রায় না হয়ে এক ডিসেম্বর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়েছে।
সায়ীদ আলমগীর/জেএস/জেআইএম