নওগাঁয় চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০২:০৬ পিএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২২

মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবিতে নওগাঁয় শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে অভ্যন্তরীণ ও দুরপাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা।

অভ্যন্তরীণ বাস বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোতে চড়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে দুর পাল্লার বাস না চলায় ঢাকাগামী যাত্রীদের বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শহরের বালুডাঙা ও ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিকরা অলস সময় পার করছে। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছে তাদের।

নওগাঁয় প্রতিদিন দুরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ প্রায় চার শতাধিক বাস চলাচল করে। এরমধ্যে অভ্যন্তরীণ ৩০০টি ও দুর পাল্লার ১০০টি। প্রতিদিন এ পরিমাণ বাস বন্ধ থাকায় প্রায় ১৮ লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

জেলার সাপাহার থেকে নওগাঁ আদালতে বেলা ১১টার দিকে আসেন আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, সাপাহার বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস নাই। জরুরি কাজ আদালতে যেতেই হবে। বাধ্য হয়ে ১২০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা দিয়ে নওগাঁয় আসতে হয়েছে। সময় ও টাকা দুটোই বেশি লাগছে। আবার বাড়ি যেতেও ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

মোটর শ্রমিক আনন্দ কুমার বলেন, প্রতিদিন কাজ করলে আমরা ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি পাই। হঠাৎ করে সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ। কয়দিন বন্ধ থাকবে জানি না। তবে বাস বন্ধ থাকলে আমাদের মতো দিনমজুরিদের পরিবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

jagonews24

মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের প্রায় পাঁচ হাজারের মতো শ্রমিক আছে। তবে কর্মজীবী শ্রমিক রয়েছে চার হাজারের মতো। প্রতিটি বাসে চালক ও হেলপারসহ তিনজন করে শ্রমিক থাকে। কাজ করা হলে প্রতিদিন প্রতিটি বাস থেকে শ্রমিকরা মজুরি পাবে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। মনে হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে বাস বন্ধ করা হয়েছে। বাস বন্ধ করে শ্রমিকদের পেটে লাথি দেওয়া হচ্ছে। কারণ একদিন বাস বন্ধ থাকলে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবহন বা বাস বন্ধ না করে সবকিছু শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান করা যেতে পারে।

নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সভাপতি মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, চালকের সঙ্গে কেন বাস মালিকের বিরুদ্ধে মামলা, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করা সহ ৯ দফা দাবিতে সরকারকে একটা আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। ২৬ নভেম্বর নাটোর জেলায় রাজশাহী বিভাগীয় মোটর মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। আমরা দুই মাস আগে থেকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে আসছি। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মানা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারই অংশ হিসেবে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশের সঙ্গে এ ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই।

এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ বলেন, বিএনপির গণসমাবেশ দুই-একদিন আগে থেকেই পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হচ্ছে। কেউ যেন সমাবেশে যেতে না পারে এজন্য এই কৌশল করা হচ্ছে। আমাদের এখানেও হবে জেনেই আমরা সেইভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের কেউ কোনভাবেই আটকে রাখতে পারবে না। এরই মধ্যে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজশাহী যেতে শুরু করেছে।

আব্বাস আলী/জেএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।