ফুটবল বিশ্বকাপ
প্রিয় দলকে ভালোবেসে ঘর সাজালেন নেদারল্যান্ডস ভক্ত
ফুটবল বিশ্বকাপ এলেই শুরু হয়ে যায় বাড়তি উন্মাদনা। প্রিয় দলের জন্য ভক্তদের কাণ্ড-কীর্তির শেষ নেই। কেউ পুরো বাড়ি পতাকার রঙে সাজিয়েছেন আবার কেউ কয়েক কিলোমিটারজুড়ে পতাকা টানিয়েছেন। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থকদের সরব উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তাদের ভিড়ে এবার দেখা মিললো নেদারল্যান্ডস দলের এক অন্ধ ভক্তের। নিজের বাসস্থানকে সাজিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের ক্রীড়া সামগ্রী দিয়ে। তার নাম মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা লস্কর।
বদরুদ্দোজা পেশায় সরকারি প্রথম শ্রেণির একজন কর্মকর্তা। বর্তমানে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অ্যাকাউন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইল এনায়েতনগর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা তিনি। শত ব্যস্ততায়ও ফুটবল খেলাকে মনে প্রাণে ভালোবাসেন বলে জানান এ ভক্ত।
চার সদস্যের পরিবার লস্করের। দুটি ছেলে সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন। তবে নিজে নেদারল্যান্ড করলেও পরিবারের অন্য সদস্যরা ভিন্ন দলের সমর্থক। তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মিলির প্রিয় দল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে ১০ বছরের বড় ছেলে আমির হামজা লস্কর জার্মানি দলের চরম ভক্ত। তবে বয়স কম হওয়ায় তিন বছর বয়সী আব্দুল্লাহ শাহেদ এখনো নিজের প্রিয় দলটি বাছাই করতে পারেনি।
বদরুদ্দোজার বসতঘরে গিয়ে দেখা যায়, ফ্লোরে আট ফুট ও ১২ ফুটের আকর্ষণীয় স্টেডিয়াম তৈরি করেছেন। বসিয়েছেন ছোট্ট একটি গোলবারও। ঘরে সংরক্ষণ আছে ১৯৮৮ সাল থেকে বর্তমান সব রকমের ২৫টি জার্সি ও টি-শার্ট। আছে নেদারল্যান্ডের কাপ (কালো, নীল), প্র্যাক্টিস কিট, পানির পট, পানির মগ, প্লেট, বল, চাবির রিংসহ অনেক টুকিটাকি জিনিস।
বদরুদ্দোজার ভাষ্যে, বাল্যকাল থেকে ফুটবলের সঙ্গে পরিচিত তিনি। খেলা বুঝতে শেখা বা উপভোগ করতে পারার অল্প কিছুদিন পর ১৯৮৮ সালে নেদারল্যান্ড ফুটবল দলকে দেখেছিলেন ইউরো কাপ জয়ী হতে। তখন সবেমাত্র মাত্র আট বছর বয়স ছিল তার। সেদিন খেলোয়াড় রুড খুলিতের ইউরো কাপ উঁচিয়ে ধরার দৃশ্য আজ অবধি আবেগতাড়িত করে বেড়ায় তাকে। ঠিক তখন থেকে রুড খুলিত তার প্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত হন। শুধু রুডই নন, মার্কো ভ্যান বাস্তেন, ফ্রাংক রাইকার্ড, রোনাল্ড কোয়েম্যান রোনাল্ড ডি বোয়েরদের খেলা বেশ ভালো লাগে।
বদরুদ্দোজা জানান, ফুটবলে বহুদলের খেলা হওয়া স্বত্বেও তার পছন্দ নেদারল্যান্ড। তাই নিজের মনকে আনন্দিত করতে প্রিয় দলের সব ক্রীড়া সামগ্রী সংগ্রহ করে নিজের ঘরে সাজিয়ে রাখেন। তার পোশাক-আশাকে ফুটিয়ে তোলেন প্রিয় দলকে।
তিনি বলেন, ফুটবলে সবচেয়ে শক্তিশালী দিক ডিফেন্স। বর্তমান দলে ভ্যান ডাইকের মতো বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার আছে। সঙ্গে আছে ডি লিট, নাথান আকে, ড্যাম্ফ্রাইস, মালাসিয়ার মতো বিশ্বের অন্যতম ডিফেন্ডাররা। মাঝমাঠে আছে বিশ্বসেরা ফ্রাংক ডি ইয়ং, ডি রুন, কোমপেয়ারস এর মতো খেলোয়াড়রা স্ট্রাইকিংয়ে আছে মেনফিস ডিপেই, গেগপো, নুয়া ল্যাং। এ দলে বিশ্বকে চমক দেখানো মাত্র ১৯ বছর বয়সী সিমন্সও আছে। যে একাই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারবেন। তাই আশা করছি এবার সিমন্সই হবে বিশ্বকাপের সেরা তরুণ প্লেয়ার।
রাশেদুল ইসলাম রাজু/এসজে/জিকেএস