পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী
জরিমানা ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ সালেক মুহিদের বিরুদ্ধে।
গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খালে বাঁধ দিয়ে মাছচাষের অভিযোগে স্থানীয়দের বিভিন্ন অংকের জরিমানা করেন এসিল্যান্ড সালেক মুহিদ। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতে যে পরিমাণ টাকা জরিমানা করা হয়েছে তার চেয়ে কম অংকের টাকার সরকারি রসিদ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সবশেষ মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ইউনিয়নের চরকানকুনি এলাকায় ফজলে করিম মৃধার ছেলে কবির মৃধা নামের এক ব্যক্তিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৫(১) ধারায় ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ কবির মৃধার।
এ বিষয়ে কবির মৃধা বলেন, “আমি কোনো সময় কারও সঙ্গে অন্যায় করিনি, কিন্তু এসিল্যান্ড আমার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছেন। সবার সামনে আমাকে ‘তুই তোকারি’ করে কথা বলেছেন, অপমান করেছেন। আমার জমির মধ্যে খাল যাওয়ায় সেখানে মাছচাষ করছিলাম, এই আমার অপরাধ। এজন্য আমাকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এসিল্যান্ড।”
তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা আমার সম্মান রক্ষায় তাৎক্ষণিকভাবে এই টাকা পরিশোধ করে দেন। কিন্তু পরে দেখি সরকারি যে রসিদ দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা ৪০ হাজার টাকা। আমি এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে এ বিষয়ে দুজন ব্যক্তি মোবাইল ফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন। আমি তাদের লিখিতভাবে জানাতে বলেছি। বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গাবালী উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ সালেক মুহিদ বলেন, ‘খালের বাঁধ অপসারণের জন্য বাড়তি টাকা নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা কাজ করছেন। এ দিয়ে তাদের মজুরি পরিশোধ করা হচ্ছে।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ছাড়া এক লাখ ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভিন্নভাবে টাকা নেওয়ার কোনো আইনগত বৈধতা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এসিল্যান্ড সালেক মুহিত।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ কামাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতে এমনটি করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটদের এভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আপনারা এ বিষয়ে আরও ভালোভাবে খোঁজ নিন।’
আব্দুস সালাম আরিফ/এসআর/এএসএম