সোনাহাট স্থলবন্দর

ইমিগ্রেশনের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২২

কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও বন্দরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। এ কারণে বন্দরের তিন হাজার শ্রমিক ও বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উপার্জনের উৎস যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি ব্যাহত হয়ে হচ্ছে বন্দরকেন্দ্রিক দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) ব্যবসায়িক সম্পর্কও।

তাই রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও বন্দরের কার্যক্রম আরও বাড়াতে ইমিগ্রেশন চালুর বিষয়টি জরুরি বলে মনে করছেন বন্দরের কর্মকর্তাসহ আমদানি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা।

সোনাহাট বন্দর সূত্রে জানা যায়, সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় অবস্থিত সোনাহাট স্থলবন্দরটি ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চালু হয়। সেভেন সিস্টারখ্যাত ভারতের আসাম, মেঘালয়, কলকাতা ও ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বন্দরটি। নির্ধারিত তালিকা অনুসারে ভারত থেকে ১০টি পণ্য আমদানি ও বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া সব পণ্য রপ্তানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বন্দরের অবকাঠামো। তবে বন্দর চালুর দীর্ঘ সময় পার হলেও ইমিগ্রেশন না থাকায় কেবল কয়লা ও পাথর আমদানি এবং হাতেগোনা দু-তিনটি পণ্য রপ্তানি ছাড়া কোনো কাজে আসছে না বন্দরটি। এতে স্থল বন্দরটির কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ইমিগ্রেশন চালু না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসায়িক সম্পর্কও। যোগাযোগের ক্ষেত্রে হতে হচ্ছে হয়রানির শিকার। মাঝে মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বন্দরের প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। অথচ এই বন্দরটি থেকে প্রতি বছর আয় হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। যদি দ্রুত ইমিগ্রেশন চালু হয় তাহলে আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দরের ব্যবসায়ী শামীম আহম্মেদ সাকিল বলেন, শুধু ইমিগ্রেশন না থাকায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করতে হয়। এতে অনেক সময় ব্যবসায়িক জরুরি আলাপ করা সম্ভব হয় না। ব্যবসায়িক কোনো সমস্যা হলে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বসে দ্রুত সমাধান করা সম্ভব না হয়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে গুনতে হয় অতিরিক্ত সময় ও অর্থ। ফলে আমদানি-রপ্তানির কাজে স্থবিরতা চলে আসে। দ্রুত ইমিগ্রেশন চালু হলে আমাদের উপকার হবে। বাড়বে রাজস্ব আয়।

সোনাহাট বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরকার রাকীব আহমেদ জুয়েল বলেন, ইমিগ্রেশন চালু হলে দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক উন্নত হবে। ব্যবসার পরিধি বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে সরকারি রাজস্বও।

সোনাহাট স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. রুহুল আমীন বলেন, করোনা পরবর্তী সোনাহাট স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এই বন্দরটিতে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু না থাকায় আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তারা সহজে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক বিষয় যোগাযোগ করতে পারছে না। তবে এটি চালু হলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি আরও অগ্রগতি হবে।

তিনি আরও বলেন, সোনাহাট স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আমরা হয়তো দ্রুত এ সুবিধাটি পেয়ে যাবো।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমীন বলেন, আমরা ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালুর জন্য তিনটি কক্ষ বরাদ্দে দপ্তরে আবেদন পাঠিয়েছি। দ্রুত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হবে। তবে কবে নাগাদ চালু হচ্ছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।

ফজলুল করিম ফারাজী/এসএইচএস/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।