এলসি সংকটে সোনামসজিদে কমেছে পণ্য আমদানি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদে এলসি সংকটের কারণে পণ্য আমদানি কমেছে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরে প্রবেশ করেনি কোনো ফলের ট্রাক। অন্য পণ্য আমদানি হলেও তা পরিমাণে খুব কম। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বন্দরের কয়েকশো শ্রমিক।
সরেজমিনে সোনামসজিদ স্থলবন্দর ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজের আশায় বসে রয়েছেন। কিন্তু বন্দরে যে পরিমাণ শ্রমিক রয়েছে সে অনুযায়ী আসছে না ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। এতে কর্মহীন হয়ে সারাদিন বসে থেকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে শ্রমিকদের।
আব্দুর রশিদ নামে এক শ্রমিক বলেন, কিছু দিন আগে দিনে ১৫-২০ ট্রাকে পণ্য লোড দিয়েছি। কিন্তু গত ১৫ দিন থেকে দিনে চার-পাঁচ ট্রাকের বেশি পণ্য লোড দিতে পারি না। এভাবে কাজ করে সারাদিনের খরচ উঠছে না।
নাজমুল নামে স্থলবন্দরের এক শ্রমিক জানান, আগে প্রতিদিন গাড়ি লোড-আনলোড করে প্রায় ৮০০-১০০০ টাকা আয় করেছি। কিন্তু গত মাস থেকেই ভারতীয় ট্রাকের সংখ্যা কমেছে। এতে আয়-রোজগার কমে দাঁড়িয়েছে ২০০-৫০০ টাকায়। কিন্তু নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছি আমরা।
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক যুবরাজ আলম মানিক বলেন, চাহিদামতো লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) পাচ্ছি না। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য আমদানি। কিছুদিন ধরে বন্দর দিয়ে ফল আমদানি করতে পারি না। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ভুট্টা ছাড়া অন্য কোনো পণ্যই আমদানি করতে পারিনি।
সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রাজু বলেন, কিছুদিন থেকে আমাদের এলসিগুলো একটু দেরিতে হচ্ছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।
পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পোর্ট ম্যানেজার মইনুল ইসলাম বলেন, গত মাস থেকেই পণ্য আমদানি কমেছে। আগে প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ ট্রাক প্রবেশ করতো। বর্তমানে ২৫০-২৮০ ট্রাক প্রবেশ করছে।
জানতে চাইলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা উদ্ধব চন্দ্র পাল বলেন, কী কারণে পণ্য আমদানি কমেছে এ বিষয়ে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধ রয়েছে। তাদের অনুমতি ছাড়া কথা বলা যাবে না।
তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর পণ্য আমদানি কমেছে। গত বছর তাজা ফল আমদানি হয়েছিল ৩১৩ ট্রাক, চলতি বছর হয়েছে ৭১ ট্রাক। পাথর আমদানি হয়েছিল ২৫ হাজারে ৫৯৫ ট্রাক, এবার হয়েছে ২ হাজার ১২৭ ট্রাক। অন্য পণ্য গত বছর আমদানি হয়েছিল ২ হাজার ৯৭০ ট্রাক, এবার হয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ ট্রাক।
এমআরআর/এএইচ/এসএইচএস/এএসএম