নিজের টাকায় করা বাড়ির গেটে তালা, প্রবাসীকে ঢুকতে দিচ্ছে না পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২২

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উজিরমুনি গ্রামের বাসিন্দা রায়হান আলী। পাঁচ বছর মালয়েশিয়া ছিলেন। এ সময় নিজের টাকায় বাড়ি করেছেন। তার বাবা ও তিন ভাই বাড়ির পাশে করাতকল দিয়েছেন।

ছয় মাস আগে দেশে ফেরে রায়হান। তিন মাস আগে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে পরিবার। ওই বাড়িতে ঢোকার জন্য তিনদিন ধরে গেটের সামনে স্ত্রীসহ অবস্থান করছেন রায়হান। তবে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢুকতে দিচ্ছেন না। তারা যাতে বাড়িতে ঢুকতে না পারেন সেজন্য গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৩ নভেম্বর) সকালে রায়হান ও তার স্ত্রীকে বাসার গেটের সামনে খড়কুটা বিছিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকে সেখানে অবস্থান করছেন এ দম্পতি।

গেটে তালা দিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ওই বাড়িতেই রয়েছেন। পেছনের দিকে থাকা একটি ছোট দরজা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও সেটিও তালাবন্ধ করে রাখছেন তারা।

রায়হান আলী উজিরমুনি গ্রামের কাঠমিস্ত্রি আইজুল ইসলামের ছেলে।

নিজের টাকায় করা বাড়ির গেটে তালা, প্রবাসীকে ঢুকতে দিচ্ছে না পরিবার

জানতে চাইলে রায়হান আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিদেশে থাকাকালীন প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরেছে। বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। বাবা ও তিন ভাই বাড়ির পাশে একটি করাতকল দিয়েছেন। আমি বাড়িতে ফেরার পর আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দিয়েছেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে সেটাও বাবাকে দিয়েছি। এখন প্রায় তিন মাস হলো তুচ্ছ ঘটনায় বাবা স্ত্রীসহ আমাকে বের করে দিয়েছেন। বাড়িতে উঠতে দিচ্ছেন না। এখন স্ত্রীকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো? তাই বাড়ির গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি।’

রায়হান আরও বলেন, ‘যখন বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতাম তখন আমি ভালো ছিলাম। এখন বাড়িতে ফেরার পর সবার কাছে খারাপ হয়ে গেছি। গতকাল থেকে বাড়ির লোকজন মারপিট করে এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমরা যাইনি।’

এ বিষয়ে রায়হানের বাবা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলে ও বউমাকে বাড়িতে রাখবো না। এজন্য অন্য জায়গায় বাড়ি করতে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে চার শতক জমি ও এক লাখ টাকা দিয়েছি। ছেলে আমার ও বাড়ির লোকজনের সম্মান রাখেনি। ওই ছেলেকে আমি ঘরে তুলবো না।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মিঞা জাগো নিউজকে বলেন, এরআগেও বাবা-ছেলের মধ্যে ঝগড়ার সূত্রপাত হলে মীমাংসা করে দেওয়া হয়। আবারও ঝামেলা দেখা দিয়েছে। পারিবারিক বিষয়ে খুব বেশি কিছু করার নেই।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ইসলাম ডন বলেন, যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক সেজন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে মীমাংসার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি মীমাংসা করতে না পারায় বাবা-ছেলেকে থানায় ডাকা হয়েছে।

তানভীর হাসান তানু/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।