ঘণ্টায় লাখ টাকা ভাড়া গুনে হেলিকপ্টারে বউ নিয়ে এলেন বর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৫:০৯ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২২

ইদ্রিস তালুকদার ও রোকেয়া বেগম দম্পতির বহুদিনের শখ ছেলের বউকে হেলিকপ্টারে করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসবেন। কিন্তু এক এক করে চার ছেলের বিয়ে হলেও শখ পূরণ হয়নি। সেই শখ পূরণ হলো ছোট ছেলে দাদন তালুকদারের বিয়েতে। বউকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে মাদারীপুরে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলেন তিনি।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে নববধূকে নিয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের উত্তর দুধখালী গ্রামের একটি স্কুলমাঠে নামে হেলিকপ্টার। এ সময় গ্রামবাসীরা ভিড় জমান। কাছ থেকে নিজ চোখে হেলিকপ্টার দেখে খুশি হন তারা।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বাবা ইদ্রিস তালুকদার আর মা রোকেয়া বেগম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেন হেলিকপ্টারে চড়ে পুত্রবধূ ঘরে আনার ঘটনা। সেই থেকে তাদের শখ ও স্বপ্ন হেলিকপ্টারে করে ছেলের বউ আনবেন বাড়িতে। সাধ থাকলেও সাধ্য না থাকায় দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের।

bor

অবশেষে বাবা-মায়ের শখ পূরণ করতে ছেলে দাদন তালুকদার শুক্রবার দুপুরে মাদারীপুরের দুধখালী ইউনিয়নের উত্তর দুধখালী গ্রামে নিজ বাড়িতে বউ নিয়ে আসেন হেলিকপ্টারে করে।

ইদ্রিস তালুকদার ও রোকেয়া বেগম দম্পতির আট সন্তান। পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে সবার ছোট দাদন তালুকদার। পেশায় একজন ব্যাংকার।

দাদন তালুকদার ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি মেনে ঢাকার মীরপুর বাংলা কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক রুমানা শবনমকে বিয়ে করেন। বাবা মায়ের সেই শখ পূরণ করতেই ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে চড়ে বউ নিয়ে আসেন।

খবর পেয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ দেখতে আসেন এই দৃশ্য। বাবা-মায়ের শখ পূরণ করতে হেলিকপ্টার চড়ে গ্রামে নববধূ নিয়ে আসায় আনন্দিত গ্রামবাসী ও বরের পরিবার।

স্থানীয় ফরিদ হোসেন, জয়নাল বেপারী, ইউসুফ হোসেনসহ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, গ্রামের মানুষ এত কাছ থেকে কোনোদিন হেলিকপ্টার দেখতে পাননি। দাদনের বিয়ে উপলক্ষে হেলিকপ্টার গ্রামে আসায় গ্রামবাসী আনন্দিত ও গর্বিত।

bor

বরের মেজ ভাই শাহীন তালুকদার বলেন, ‘ছোট ভাই দাদন তালুকদার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে গ্রামে এসেছে। এতে আমার বাবা-মায়ের স্বপ্নটা পূরণ হলো। গ্রামবাসীও হেলিকপ্টার দেখে আনন্দ পেয়েছে।’

কনে রুমানা শবনম বলেন, ‘দাদন তার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে। এটা আমার ভালো লেগেছে। নতুন এক অভিজ্ঞতা। এতে আমি অনেক আনন্দিত। গ্রামবাসী যেভাবে আজ আমাকে বরণ করে নিলো, সেটাও অনেক উপভোগ করেছি।’

এ বিষয়ে বর দাদন তালুকদার বলেন, ‘বাবা-মায়ের শখ পূরণ করতে হেলিকপ্টারে করে বউ এনেছি। এজন্য ঘণ্টায় এক লাখ টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে। তবে টাকা বড় কথা নয়, বাবা-মায়ের শখ পূরণ করতেই এই আয়োজন।’

বরের বাবা ইদ্রিস আলী তালুকদার বলেন, ‘একসময় পরিবারে আমরা আলোচনা করতাম এক ছেলের বউ হেলিকপ্টারে করে বাড়িতে আনবো। সে কথা মনে রেখে আমার ছোট ছেলে দাদন আজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে করে বউ এনেছে। মনে খুব শান্তি পেয়েছি। আর কোনো শখ বাকি নাই। এতে খুব আনন্দিত আমি।’

এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।