রিকশা হারিয়ে পাগলপ্রায় সাইদুর
অডিও শুনুন
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে রাত থেকে। এই বৃষ্টির মধ্যেই পাগলের মতো দিগ্বিদিক ছুটছেন সাইদুর রহমান। ছোটার কারণে তার জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম রিকশাটি চুরি হয়ে গেছে। রিকশা হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি।
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামের দিনমজুর ইয়ার আলীর ছেলে সাইদুর রহমান। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দুমাস আগে রিকশাটি কিনেছিলেন।
রোববার (২৩ অক্টোবর) রাতে নিজ বাড়ির উঠানে ব্যাটারিচালিত রিকশাটি চার্জ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন সাইদুর রহমান। মধ্যরাতে তার মা জেগে উঠে দেখেন উঠানে রিকশা নেই, চুরি হয়ে গেছে। তখন থেকেই বিভিন্ন স্থানে রিকশার খোঁজ করছেন সাইদুর।
আগে ভাড়ায় রিকশা চালাতেন সাইদুর রহমান। দুমাস আগে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি রিকশা কেনেন এবং বাড়িতে একটি নতুন ঘর দেন। তার ১৪ মাস বয়সী এক শিশুসন্তানও রয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাইদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছেলের সপ্তাহে এক কৌটা করে দুধ কিনতে হয়। তার দাম ৬০০ টাকা। আর গ্রামীণ ব্যাংক, সাজেদা ফাউন্ডেশন এবং সিসিডিবি এনজিওর কিস্তি দিতে হয় সপ্তাহে সাড়ে পাঁচ হাজার। দিনরাত রিকশা চালিয়ে প্রতিদিন এক হাজার থেকে বারশ টাকা আয় হতো। তা দিয়েই সংসার চালতো। রিকশাটি হারিয়ে আমি অসহায় হয়ে পড়েছি।’
চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি বলেন, ‘এখন ছেলের দুধ কিনবো কীভাবে আর কিস্তিইবা পরিশোধ করবো ক্যামনে। কিস্তি ওয়ালারাতো চাপ দেবে। কীভাবে কী করমু বুঝতে পারছি না।’
সাইদুরের চাচাতো ভাই সেলিম মিয়া বলেন, ‘মধ্যরাতে কান্নাকাটির আওয়াজ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে শুনি সাইদুরের রিকশাটি চুরি হয়ে গেছে। তার মা উঠানে গড়াগড়ি করে কান্না করছেন। পরিবারটি রিকশার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। এ অবস্থায় রিকশাটি চুরি হওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তারা রিকশাটি উদ্ধারে চেষ্টা চালাবেন।
বি.এম খোরশেদ/এসআর/এএসএম