স্কুল যমুনাগর্ভে, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান অনিশ্চিত
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার ৮০নং চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন মঙ্গলবার যমুনার গর্ভে বিলীন হয়। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে ওই বিদ্যালয়ের আরেকটি ভবনও যমুনার গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এ অবস্থায় স্কুলের মালপত্র সরিয়ে খোলা জায়গায় রাখা হয়েছে। কাছাকাছি আর কোনো স্কুলও নেই, যেখানে পড়ালেখা করবে স্থানীয় শিশুরা। ফলে বাচ্চাদের শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা।
এই চিত্র শুধু একটি বিদ্যালয়ের নয়। সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ও অসংখ্য বসতবাড়ি গ্রাস করেছে যমুনা।
চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের রোকেয়া বেগম জাগো নিউজকে জানান, কিছুদিন আগে তাদের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা বলেন, স্কুল নদীগর্ভে, এখন কোথায় পড়বে শিশুরা! নদীভাঙন সবসময় তাদের আতঙ্কে রাখে। শুধু স্কুলের ভবন নয়, অর্ধশতাধিক ঘরবাড়িও বিলীন হয়ে গেছে। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম জাগো নিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে ভাঙন শুরু হয়। এই ভাঙনের কবলে পড়ে ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভবনটি আমাদের চোখের সামনে নদীতে চলে গেছে। এর ফলে বিদ্যালয়টির আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়লো।
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, চার বছর আগেও বিদ্যালয়টি যমুনা নদী থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেটি কদিন আগে দাঁড়িয়েছিল ৭ থেকে ১০ ফুটে। সম্প্রতিক যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়। আর এতে বিদ্যালয়ের একটি ভবন যমুনায় বিলীন হয়ে যায়। বিদ্যালয়ের আরেক ভবনের সিংহভাগ অংশ নদীতে ঝুলে আছে। সেটিও নদীগর্ভে যায় যায় অবস্থা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বন্যা ও নদী তীর ক্ষয়ের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিনিয়োগ কর্মসূচি প্রকল্প-২ এর আওতায় ৩১ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সদিয়া চাঁদপুরের মেহেরনগর থেকে এনায়েতপুর বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার আন্ডার ওয়াটার ওয়েভ প্রটেকশন কাজ করা হবে। এ জন্য ঠিকাদার নিয়োগের কার্যক্রম চলছে।
এম এ মালেক/কেএসআর/জেআইএম