বাঁশের একমাত্র সাঁকোই পাঁচ গ্রামের মানুষের ভরসা
ছিলোনিয়া নদীর বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষ। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জামমুড়া সড়কে প্রায় ৫০ বছর ধরে এ বাঁশের সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা।
স্থানীয়রা জানান, ফকিরখিল, কমুয়া, জামমুড়া, কামাল্লা ও উত্তর আনন্দপুর এলাকার মানুষ দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত একমাত্র বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে পারাপার হচ্ছেন। ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় খরস্রোতা নদীর সাঁকো। শিশুদের স্কুলে যাতায়াত করার জন্য অন্যদিক দিয়ে ঘুরে, দশ টাকার ভাড়া ত্রিশ টাকা দিয়ে যেতে হয়।
এভাবে এই এলাকার মানুষকে প্রতিনিয়ত কষ্ট ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ছিলোনিয়া নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে। অন্যদিকে লোকশান থেকে বাঁচতো কৃষকরা। নদীর এপার-ওপারে ধান চাষ করে মৌসুমে এই সোনালী ফসল ঘরে তুলতে অনেক দূর দিয়ে গাড়িযোগে ফসল বাড়ি আনতে হয়। এতে অনেক ভাড়া গুনতে হয়। স্থানীয়দের প্রাণের দাবি একটি সেতু নির্মাণের। এতে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের সময় বাঁচবে ও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
স্থানীয় আবদুল হাই জানান, বাঁশের সাঁকোই ছিলোনিয়া নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম, গ্রীষ্ম-বর্ষা সব সময় ছোট বড় সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে এই নদী পার হতে হয়। একটি সেতুর জন্য হাজারও মানুষের কষ্টের সীমা নেই। শিশুরা নদী পার হওয়ার সময় সাঁকো থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় ও আতঙ্কে থাকে।
জহিরুল হক (৬০) জানান, ছোটবেলা থেকে দেখছি এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই বাঁশের সাঁকো। প্রায় ৫০ বছর যাবত এই এলাকার ছোট বড় সবাই এই বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে আসছে। প্রতি বছর এই পাঁচ গ্রামের মানুষের কাছে থেকে টাকা সংগ্রহ করে ৬০-৭০ হাজার টাকা ব্যয় করে এ সাঁকো মেরামত করা হয়। সরকার সারাদেশ অনেক উন্নয়ন করছে। এখানে একটি সেতু নির্মাণ করে দিলে আমরা হাজারও মানুষ উপকৃত হবো।
মুন্সীরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, ছিলোনিয়া নদীর ওপর সেতুর বরাদ্দের জন্য জিএমপি-৩ এর আওতায় প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে। তবে কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
ফুলগাজী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) কর্মকর্তা সৈয়দ আসিফ মাহমুদ জানান, জামমুড়া এলাকায় ছিলোনিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে তৈরি করতে অনেক সময় লাগতে পারে। তারপরও চেষ্টা থাকবে দ্রুত সেতু নির্মাণের জন্য যেন বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলায় বর্তমানে যে সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ কাজ করা হবে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমআরএম/জেআইএম