কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য চালক সুজন শিকদারকে (৩৪) হত্যার দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম আসাদ (৩৪) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর দত্তপাড়া গ্রামের ইউনুচ আলীর ছেলে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ঝিনাইদহের বড় খরিখালি গ্রামের গনি মোল্লার ছেলে রাজু মোল্লা (২৬) এবং ঝিনাইদহের কয়াগাছি মুক্তাঙ্গন আবাসন প্রকল্প এলাকার আমজাদ দফাদারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩১)।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাজু এবং শরিফুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম আসাদ এখনো পলাতক। তাকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
নিহত সুজন শিকদার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি ইউনিয়নের ২ নম্বর কলোনির বাসিন্দা।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ ভাড়ায়চালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন সুজন শিকদার। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তার ভাই কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ২৯ মার্চ সকালে ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া এলাকার একটি লিচুবাগান থেকে গলাকাটা একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
খবর পেয়ে সুজনের ভাই আলমগীর শিকদার ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি সুজনের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই আলমগীর শিকদার বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মহানন্দ সিং তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে সুজন শিকদারের অটোরিকশা ভাড়া করে ওই সংঘবদ্ধ চক্র। কিন্তু ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় তাকে কৌশলে ভেড়ামারার নির্জন এলাকায় নিয়ে হত্যা করেন তারা। পরে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।
আল-মামুন সাগর/এসআর/এএসএম