নিয়মিত অফিস করেন গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামি ইউপি চেয়ারম্যান!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর উচ্ছেদ চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান সাঈফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত ৩০ আগস্ট প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম মামলা করার পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ আটজন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক আল-আমিন।
তবে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও একমাসে গ্রেফতার হননি উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈফ উদ্দিন। শুধু তাই নয়, পুলিশ তাকে পলাতক বললেও তিনি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অফিস করেন বলে জানা গেছে। এছাড়া তাকে এলাকার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকতেও দেখা গেছে।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার কবর উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছিল চেয়ারম্যান ও তার ভাইসহ একটি চক্র। এই ঘটনায় মামলার পর ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এর মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনজন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ভাইদের জামিন দেননি আদালত।
মামলার বাদী আরও বলের, গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদে আসছেন, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া আজ (গত ৩০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা পরিষদে এক সভায় এবং কয়েকদিন আগে পাশের ইউনিয়ন পরিষদে এক সভায় প্রকাশ্যে উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রকাশ্যে থাকলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান নিয়মিত পরিষদে আসেন। আজও (৩০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান সাহেব ও আমরা মেম্বাররা জেলা পরিষদ নির্বাচনের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সভায় ছিলাম।
৬ নম্বর শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. জাফর খাঁন বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান পরিষদে সবসময় আসেন। জনগণের সেবা দিতে উনি অনেক সময় পরিষদে শুক্রবারও থাকেন। বৃহস্পতিবারও (২৯ সেপ্টেম্বর) তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষদে ছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে শনিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈফ উদ্দিন চৌধুরীর মোবাইলফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, জানতে চাইলে আশুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন চন্দ্র পাল বলেন, চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন জামিন এনেছেন বলে জানা নেই। আমাদের কাছে এমন কোনো কাগজ জমা দেননি।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ-সরাইল সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, আমি যতটুকু জানি ওই ইউপি চেয়ারম্যান জামিনে নেই, তিনি পলাতক আছেন। তাকে দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এমআরআর/জেআইএম