সাভারে ৪০ টাকার ভিটামিন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়!

মাহফুজুর রহমান নিপু মাহফুজুর রহমান নিপু , উপজেলা প্রতিনিধি সাভার
প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

শরীরের বলকারক হিসেবে চটকদার বিজ্ঞাপনে ঢাকার সাভারে বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের ভিটামিন ওষুধ। এর কোনোটি সিরাপ আবার কোনোটি ট্যাবলেট। এসব ওষুধের দাম আর মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় তা বাজারে সয়লাব। প্রশাসনের প্রয়োজনীয় নজরদারি না থাকায় এসব ওষুধ অবাধে বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি করেন ওই এলাকার সচেতন মহল।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো, সাভারের ওষুধের দোকানগুলোতে নানা অখ্যাত ও ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানের এসব ভিটামিন মিলছে। শুধু তাই নয়, পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসব ওষুধ মাত্র ৪০-৫০ টাকায় কিনে ক্রেতাদের কাছে প্রায় ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

এসব ওষুধ নিয়ে ফার্মাসিস্ট এ বি এম জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, কিছু ওষুধ আছে যা শুধু নামেই, কাজের না। এসব ওষুধ শরীরের ক্ষতিই করে। কোম্পানিগুলো এক ফাইল ভিটামিন ৪০/৫০ টাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীর হাতে তুলে দেয়। আর সেই ওষুধ সহজ-সরল ক্রেতাদের কাছে ৩৫০/৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

ফার্মাসিস্টের কথার সত্যতা যাচাই করতে জাগো নিউজের প্রতিনিধি সাভারের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে অনুসন্ধান করেন। কয়েকটি দোকান ঘুরেই পাওয়া গেলো এর সত্যতা।

বাজারে হেলফিট ভিটামিনের পাইকারি মূল্য ৫৫ টাকা হলেও গ্রাহকের কাছে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। রুচিট্যাব, বিফিট, স্ক্যান ডি, চিরতার প্যাকেট ৬০ টাকা করে পাইকারি বিক্রি হলেও খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। ডেইলি ভিটা ও সান ভিটা ৮০ টাকা দরে পাইকাররা বিক্রি করলেও তা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। হেপসন, হ্যাপি আমলকি ও হ্যাপি সান ওষুধের পাইকারি মূল্য ১৪০ টাকা হলেও তা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। এমন অসংখ্য ওষুধ আছে বাজারে। কোনোটি অনুমোদিত আবার কোনোটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের।

তবে কীভাবে দোকানগুলোতে ৪০ টাকার ওষুধ ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হলে ওষুধ বিক্রেতা হাসান মিয়া বলেন, কিছু ওষুধ আছে যা আমাদের কেনা ৪০ টাকা তবে বিক্রি প্রায় ৪০০ টাকার মতো। এগুলো অনুমোদিত কি না তা আমরা জানি না। আমাদের তেমন কিছু করার নেই। লোকে এসে চায়, আমরা বিক্রি করি।

আরেক ওষুধ বিক্রেতা রেজাউল বলেন, ৪০-৫০ টাকায় কেনা হলেও প্যাকেটের গায়ে বেশি দাম লেখা থাকে। তাই গায়ের দামেই বিক্রি করি।

তবে কেবল ওষুধগুলোর দাম নিয়েই নয়, মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন চিকিৎসকরা। ল্যাব ওয়ান হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, বাজারে কিছু ওষুধ আছে যা অনুমোদনহীন। ওষুধ বিক্রেতারা অধিক মুনাফার জন্য সেগুলো বিক্রি করে। এতে করে সেবনকারী কিডনি, লিভারসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন। বিক্রেতাদের চাটুকারিতা ও গ্যারান্টি দেওয়ায় অনেকেই এসব ওষুধ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক আইয়ুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যারা অনুমোদন না নিয়ে ওষুধ বাজারজাত করছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। আর যারা অধিক দামে ওষুধ বিক্রি করেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।