সাংবাদিককে গালি দিয়ে ভাইরাল প্রধান শিক্ষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৯:০২ এএম, ১৮ আগস্ট ২০২২
প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার ও যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রী

শরীয়তপুরের ডামুড্যা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে স্থানীয় দুই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন তিনি। এমন একটি অডিও ক্লিপ বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

এছাড়া সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রী ও সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোনে কথপোথনের অডিও ক্লিপও ভাইরাল হয়েছে।

সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও ওই বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রথি কান্ত মিস্ত্রী ওই স্কুলের কৃষিশিক্ষা ও স্কাউট বিষয়ক সহকারী শিক্ষক। তিনি স্কাউটিং প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১১ আগস্ট দুপুরে স্কাউটদের সাপ্তাহিক মিটিং ছিল। কোনো কারণ ছাড়াই রথি কান্ত মিস্ত্রী সেই মিটিং বাতিল করে দেন। পরে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে ওই ছাত্রীকে স্কুলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। তারপর সেখানে ওই ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন রথি কান্ত মিস্ত্রী। এই বিষয়টি শিক্ষার্থীরা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারকে জানালে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

পরে যৌন হয়রানির বিষয় জানতে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয় ও শাহাদাৎ হোসেন শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রীর মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ করেননি। তাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিষয়টি জানতে প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকারের কাছে যান ওই সাংবাদিকরা। কিন্তু বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে বলতে রাজি হননি প্রধান শিক্ষক। তাই সাংবাদিকরা চলে আসেন।

পরে রাত ৯টার দিকে সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয়ের মোবাইলে কল করেন প্রধান শিক্ষক। হৃদয় কল রিসিভ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালি করেন সুজিত কর্মকার। এছাড়া দুই সাংবাদিককে মারধরের হুমকিও দেন প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার বলেন, ‘সাংবাদিকরা ডিস্টার্ব করছে, এলোমেলো কথা বলছে ও টাকা পয়সা চাচ্ছে। তাই আমার মন ভালো ছিল না। সাংবাদিক মানুষ তাদের এভাবে বলা ঠিক হয় নাই।’

তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক রথি কান্ত মিস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, তথ্য চাওয়া আমাদের অধিকার। কিন্তু তথ্যতো পাইনি উল্টো আমাদের হুমকি ও গালাগালি করেছেন প্রধান শিক্ষক সুজিত কর্মকার। আমরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র শর্মা বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। শিক্ষকরা যে কাজটি করেছেন সরেজমিনে গিয়ে তার তদন্ত করবো। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাছিবা খান বলেন, সহকারী শিক্ষকের বিষয়ে আমি শুনেছি। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের হুমকি ও গালাগালি করেছেন বলে জেনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছগির হোসেন/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।