গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারে
লাশের জন্য অপেক্ষা স্বজনদের, বাড়িতে শোকের মাতম
ঢাকার উত্তরায় ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে নিহত পাঁচজনের বাড়ি জামালপুরে চলছে শোকের মাতম। এ ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজনরা।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগপয়লা গ্রামে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগপয়লা গ্রামের ইজিবাইক মিস্ত্রি জাহিদ আকন্দের স্ত্রী ঝর্না আক্তার (২৭), ঝর্না আক্তারের দুই শিশুসন্তান জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪), ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের ঢেংগারদড় এলাকার ফাহিমা আক্তার (৩৮) এবং মেহেরপুর উপজেলার আইয়ুব আলীর ছেলে হোসেন রুবেল (৫৫)।
এর আগে সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলে পাঁচজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরে।
নিহত ঝর্না বেগমের স্বামী জাহিদ আকন্দ বলেন, ‘স্ত্রীর ভাগনির বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) আমি ঢাকার আশুলিয়া যাই। শনিবার (১৩ আগস্ট) বিয়ে শেষে স্ত্রী-সন্তান রেখে আমি বাড়ি চলে আসি। সোমবার বৌভাত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সবাই উত্তরা যায়। অনুষ্ঠান শেষে নবদম্পতি, কনের মা, খালা, খালাতো ভাই, বোন, বরের বাবা রুবেল মিয়া (গাড়িচালক) প্রাইভেটকারে আশুলিয়া ফিরছিলেন। এ সময় উত্তরা বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারটি চাপা পড়ে। এতে সৌভাগ্যক্রমে নবদম্পতি বেঁচে গেলেও ঘটনাস্থলে পাঁচজন মারা যান।’
স্বজনরা জানিয়েছেন, ঝর্না ও তার দুই সন্তানের মরদেহ দাফন করা হবে মেলান্দহ উপজেলার আগপয়লা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে। ফাহিমার মরদেহ দাফন করা হবে ইসলামপুর উপজেলার ঢেংগারগড় গ্রামে।
নিহত ঝর্না বেগমের স্বজন আব্বাস মিয়া বলেন, ‘সরকারের একটি বড় প্রকল্পের কাজে যাদের গাফিলতির কারণে অকালে এই তাজা প্রাণগুলো ঝরে গেলো তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
পাথর্শী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম জাগো নিউজকে বলেন, ওই দুর্ঘটনায় ইসলামপুর উপজেলার আমার ইউনিয়নের একজনের মৃত্যু হয়েছে। পার্শ্ববর্তী মেলান্দহ উপজেলায় তিনজন মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের দাফনের জন্য এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এখনো মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়নি। পৌঁছামাত্র পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মো. নাসিম উদ্দিন/এসআর/জেআইএম