প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি, বাল্যবিয়ে করলেন কনস্টেবল
যশোরের চৌগাছায় আশাদুজ্জামান পিকুল নামে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ১৬ বছর বয়সী স্কুলছাত্রীকে বিয়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিষেধ উপেক্ষা করে বাল্যবিয়ে করায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
কনের বয়স দুই বছর বাড়িয়ে রোববার (১৪ আগস্ট) যশোর নোটারি পাবলিকের এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণা দেন তিনি।
অভিযুক্ত আশাদুজ্জামান পিকুল উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মাড়ুয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছোট ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ আগস্ট কনস্টেবল পিকুলের বড় ভাই তৌহিদুর রহমান নয়নের (৩৬) সঙ্গে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামের ১৭ বছরের কিশোরীর বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল। আর পিকুলের (২৮) সঙ্গে উপজেলার সলুয়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে সাদিয়া আক্তারের (১৬) বিয়ের দিন নির্ধারিত ছিল ৬ আগস্ট।
বাল্যবিয়ের বিষয়টি একটি মাধ্যমে জানতে পেরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা নিজে কনস্টেবল পিকুলকে মোবাইলে নিজের এবং তার ভাইয়ের বাল্যবিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ, জগদীশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার সিরাজুল ইসলামও মোবাইলে পিকুলের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় পিকুল নিজে এবং তার ভাই বাল্যবিয়ে করবেন না মর্মে তাদের কাছে অঙ্গীকার করেন।
কিন্তু রোববার (১৪ আগস্ট) যশোর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণা দেন সাদিয়া আক্তার ও আশাদুজ্জামান পিকুল। তাদের ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, যশোর সদর কাজি অফিসের (তবে কাজির নাম দেননি) মাধ্যমে তারা এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছেন। এফিডেভিটে সাদিয়া আক্তারের জন্ম তারিখ ২০০৪ সালের ১৯ মে দেখানো হয়েছে। অথচ ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ইস্যু করা জন্মনিবন্ধনপত্রে কনে সাদিয়ার জন্ম তারিখ ২০০৬ সালের ১৯ মে। এফিডেভিটে সাদিয়ার বয়স দুই বছর বেশি দেখানো হয়েছে। নোটারি পাবলিকে বিয়ের ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরুফা সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ সদস্য পিকুলের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে সংক্রান্ত ডকুমেন্ট আমাদের হাতে এসেছে। তথ্য গোপন করে বাল্যবিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে। একই সঙ্গে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হবে।
মিলন রহমান/এসজে