নরসিংদীতে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি : ৭ ডাকাত গ্রেফতার
মহাসড়কে পুলিশের পোশাক পরে পণ্যবাহী গাড়ি ও সিএনজি ডাকাত চক্রের ৭ জনের একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার ৩ দিনের বিশেষ অভিযানে লুট করা একটি পিকআপ ভ্যানসহ তাদেরকে গ্রেফতার করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান নরসিংদীর পুলিশ সুপার আমেনা বেগম (বিপিএম)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১২টার দিকে নরসিংদীর সাহেপ্রতাপ এলাকা থেকে পুলিশের পোশাক পরে একটি ডিম বোঝাই পিকআপভ্যান ডাকাতি করা হয়। ওই ঘটনায় গাড়ির মালিক সাইদ হোসেন নরসিংদী সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তার বাড়ি বেলাব উপজেলার রাঙ্গারটেক এলাকার। ঘটনাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফারকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলম এর তত্বাবধানে অপরাধিদের ধরতে বিভিন্ন কৌশল ও তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় অপরাধী চক্রকে সনাক্ত করা হয়। তাদের উপর নজরদারীর এক পর্যায়ে নরসিংদীর পলাশ থানার ঘোড়াশাল এলাকা থেকে লুট করা পিকআপ ভ্যান ও ৪ সেট পুলিশের পোশাকসহ ২ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার গাজীপুর গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে, নান্নু মিয়া (৪০), একই এলাকার ইমান মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, তাদের সঙ্গে আরও ৫ ডাকাত সদস্য ঢাকা ময়মনসিংহ রোডে অনূরুপভাবে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে ওই এলাকায় অবস্থান করছে। এই তথ্যের সূত্র ধরে পুলিশ সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টার কৌশলি অভিযানে গাজীপুর চৌরাস্তার উত্তর পার্শ্বে মহাসড়কের নীচ হইতে ওই ৫ ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করে। তারা হলো, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার অলিপুর গ্রামের মৃত নওয়াব মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৫৫), নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের বন্দর এলাকার মজিবুর রহমানরে ছেলে আমির হোসেন (৪৫), পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার সোহাগদল গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার ছেলে মো. শাহীন(২৮), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি থানার নওদাবস গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের ছেলে রেজাউল করিম (২৭) ওরফে (রানা) এবং অড়াইহাজার থানার খাকান্দা পাড়ার আ. খালেক মোল্লার ছেলে মো. মোস্তফা (২৪)।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অপরাধীরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা হইতে চট্টগ্রাম রোডের কাঁচপুর এলাকা, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ রোডের চৌরাস্তা এবং ঢাকা-সিলেট রোডের ভৈরব থেকে পাঁচদোনা, সাহেপ্রতাপ এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে গাড়ি থামিয়ে কাগজ পত্র চেক করার নাম করে মুরগি, মুরগির ডিম ও মাছের পিকআপভ্যান লুট করাই তাদের পেশা। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। অবৈধভাবে পুলিশের পোশাক নিজ দখলে রাখার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের পরপরই তাদেরকে আদালতে তোলা হয়। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অধিক তদন্তের স্বার্থে প্রত্যেকের ৭ দিনের রিমান্ড আবদেন করেন। আদালত প্রত্যেক আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে ডাকাত চক্র গ্রেফতার হওয়ায় পোল্ট্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
সঞ্জিত সাহা/ এমএএস