মাকে হত্যার পর ভাগে ১০ হাজার টাকা পেল ছেলে
বৃদ্ধ মায়ের সহায়-সম্বল হাতিয়ে নিতে খুন করা হয় মাকে। তিন সহযোগিকে নিয়ে ঘাতক ছেলে ইউনুস নিজের গর্ভধারিণী মাকে হত্যা করে। মাত্র ১০ হাজার টাকার লোভে সে এ কাণ্ড ঘটায়।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ জানুয়ারি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপের হাট এলাকায়। পুলিশ ঘাতক ছেলে ইউনুসকে গ্রেফতার করেছে।
বগুড়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) গাজিউর রহমান সোমবার দুপুরে এই তথ্য জানান।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুসারে রোববার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত ইউনুছ তার মা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুলাহ আল মামুন তার দেওয়া জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করে তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
স্বীকারোক্তি দেয়া জবানবন্দির তথ্য থেকে জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ধাপহাট এলাকার বৃদ্ধ রোকেয়া বেওয়ার সহায়-সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে তার বড় ছেলে ইউনুস এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তার সঙ্গী হয় তিন সহযোগী। কারণ হিসেবে সে উল্লেখ করে মায়ের সঙ্গে তার বনিবনা ছিল না। তাছাড়া সব জমি ও গরু বিক্রি করে তার মা একটি টাকাও তাকে দেননি। সব টাকাই তার মায়ের কাছেই আছে এমন লোভ থেকেই গত ১৫ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে ইউনুস তার মায়ের শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে ঢুকেই সে তার মা রোকেয়া বেওয়াকে লোভ দেখায় যে এই রাতেই পাশের নিমতলা মাজারে যেতে হবে। তোমার কাছে যা টাকা গচ্ছিত আছে তা ওই মাজারে নিয়ে যেতে পারলে দ্বিগুণ হবে। ছেলের এ কথা শুনে মা রোকেয়া ছেলের সঙ্গে ওই মাজারে যায়। সেখানেই গিয়েই ঘাতক রূপে আবির্ভূত হয় ছেলে ইউনুস। আশেপাশ থেকে আরও তিন খুনি বের হয়। তারা তাকে একটি সরিষা ক্ষেতের মেশিন ঘরে নিয়ে রোকেয়ার কাছে থাকা টাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়। এরপর ঘাড় মটকিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর ১৭ জানুয়ারি সরিষা ক্ষেত থেকে রোকেয়া বেওয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এএসপি গাজিউর রহমান জানান, প্রথম দিকে এ হত্যার কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। খুনি কে তাকেও সনাক্ত করা দুরূহ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু মায়ের জানাযায় সন্তান ইউনুস না আসায় পুলিশের সন্দেহ হয়। এই সন্দেহ থেকেই পুলিশ ইউনুসকে গ্রেফতার করলে সে মা হত্যার দায় স্বীকার করে তার সহযোগিদের নাম প্রকাশ করে।
ইউনুস স্বীকার করেছে, মাকে হত্যা করার সময় তার কাছে থাকা টাকার মধ্যে নিজের ভাগ হিসেবে মাত্র ১০ হাজার টাকা পেয়েছে। এ পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘাতকদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ১৮ জানুয়ারি নিহত রোকেয়া বেওয়ার ছোট ছেলে ইয়াকুব বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
লিমন বাসার/ এমএএস/পিআর