কমিউনিটি ক্লিনিক

সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই থাকে বন্ধ, সিএইচসিপিরা ইচ্ছামতো আসেন-যান

কামরুজ্জামান আল রিয়াদ
কামরুজ্জামান আল রিয়াদ কামরুজ্জামান আল রিয়াদ , উপজেলা প্রতিনিধি, শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২২

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তদারকির অভাবে খেয়ালখুশি মতো চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক। রোগীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। রোগীদের অভিযোগ, শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ক্লিনিকে আসেন। আবার ইচ্ছা হলে চলে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের নিশাপট, কাজীরগাঁও, কলিমনগর; নুরপুর ইউনিয়নের নুরপুর, চাঁনপুর ও ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নে উলুহর গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে সরকার। এগুলোর মধ্যে কাজীরগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিক ও চাঁনপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। সিএইচসিপিদের ইচ্ছা অনুযায়ী চলছে স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের কাজীরগাঁও ও নুরপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর কমিউনিটি ক্লিনিক দুটি তালাবদ্ধ। সিএইচসিপিকে না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বিভিন্ন বয়সী রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন।

jagonews24

স্থানীয়রা জানান, কাজিরগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি তানিয়া আক্তার অনেকদিন ধরেই ক্লিনিকে অনিয়মিত। মাঝে মধ্যে এলেও কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে যান। নিয়মিত না খোলার কারণে ক্লিনিকের দরজার কাছেই বালু রাখা হয়েছে।

কাজীরগাঁও ক্লিনিকের পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মতিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সিএইচসিপি তানিয়া মাঝে মধ্যে ক্লিনিকে আসেন। দু-এক ঘণ্টা বসে আবার চলে যান। সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন বন্ধ থাকে। চিকিৎসা ও ওষুধ নিতে আসা রোগীরা খালি হাতে ফিরে যান। বাধ্য হয়ে রোগীদের প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।’

এ বিষয়ে কাজিরগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি তানিয়া আক্তার ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি অসুস্থ। ১৫-২০ দিন ধরে সকাল-বিকাল থেরাপি নিতে হচ্ছে। এছাড়া আমার এখানে পরিবার কল্যাণ সহকারী (এফডব্লিওএ) ও স্বাস্থ্য সহকারী এইচএ) না থাকায় একাই সবকিছু সামাল দিতে হয়। এফডব্লিউএ এবং এইচএ থাকলে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে পারতাম।’

jagonews24

চাঁনপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহবুবুর রহমান সুয়েবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চাঁনপুর গ্রামের রায়হান মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘সিএইচসিপি মাহবুবুর রহমান সপ্তাহে দু-তিনদিন ক্লিনিকে আসেন। এসে কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে যান। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছামতো ক্লিনিক খোলেন আর লাগান।’

এ বিষয়ে সিএইচসিপি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে যে আমাদের কোনো সমস্যা হলে এফডব্লিওএ কিংবা এইচএকে দায়িত্ব দিয়ে লিভ (ছুটি) নিতে পারবো। তবে কোনো অবস্থায়ই ক্লিনিক বন্ধ রাখা যাবে না। আজ (বৃহস্পতিবার) আমার বাচ্চা অসুস্থ থাকায় আমি হাজিরা দিয়ে এফডব্লিওএকে দায়িত্ব দিয়ে চলে আসছিলাম। সে কেন ক্লিনিক বন্ধ করে চলে গেলো সেটা সেই বলতে পারবে।’

জানতে চাইলে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কামরুল জমাদ্দার বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কমিউনিটি ক্লিনিক চলবে। হেলথ কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারদের ইচ্ছামতো চলার সুযোগ নেই।

jagonews24

তিনি বলেন, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। কেউ যদি টাকার বিনিময়ে ওষুধ বা চিকিৎসা দেন এটা অপরাধ। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্বে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।