জামালপুরে এক প্লেট ভাতের দাম ২০ টাকা
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে জামালপুরে হোটেল-রেস্তোরাঁয়। ফলে বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। কিছুদিন আগেও এক প্লেট ভাতের দাম ছিল ১০ টাকা। সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
হোটেল মালিকদের দাবি, আগে যে চালের বস্তা ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৪০০ টাকায় কিনতেন সেটি এখন ১ হাজার ৭০০-২ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই আগের দামে ভাত বিক্রি করতে পারছেন না।
শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার হোটেল-রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা যায়, আগে সকালে যেখানে দেড় প্লেট ভাত, আলুভর্তা, ডালভাজি পাওয়া যেত ২৫-৩০ টাকায়, এখন লাগছে ৫০-৬০ টাকা। আগে দুপুরে দেড় প্লেট ভাত, এক প্লেট ছোট মাছ, এক প্লেট পাতলা ডাল খেলে খরচ হতো ৫০-৬০ টাকা। সেখানে খরচ হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। কোনো কোনো হোটেলে আরও বেশি। চাষের রুই বা কাতলা প্রতি পিস ৬০-৭০ এবং সবজি প্রতি প্লেট ২০ টাকা।
সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, অনেক হোটেল মালিক দাম না বাড়িয়ে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন। এতে ঠিকমতো পেট ভরছে না তাদের।
কথা হয় একটি বেসরকারি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি সাইদুর রহমানের সঙ্গে। কাজ করার সুবাদে তাকে প্রতিনিয়ত বাইরে খেতে হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আগে সকালের খাবার ২০-২৫ টাকায় হয়ে যেতো। এখন তাকে সেই একই খাবার খেতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। তবুও পরিমাণে খুবই কম।
ডেন্টিস্ট শাহনেওয়াজ সোহাগ, সারাদিন চেম্বার করার কারণে দুপুরের খাবার তাকে বাইরেই খেতে হয়। তিনি জানান, খাবারের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি। এক সময় এক প্লেট ভাতের দাম ছিল ১০ টাকা। এখন হাফ প্লেট ভাতের দাম নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা। আগে দেড় প্লেট ভাত খেলে পেট ভরে গেলেও এখন দ্বিগুণ টাকায় দুই প্লেট ভাতেও পেট ভরে না। আগে এক প্লেট মাংস নেওয়া হতো ১২০ টাকা কিন্তু এখন নেওয়া হচ্ছে ১৬০ টাকা। কোনো কোনো হোটেল-রেস্তোরাঁয় আরও বেশি।
এছাড়া আগে এক প্লেট কাচ্চি খেতেন ১৩০-১৫০ টাকায়। কিন্তু এখন ১৮০-২০০ টাকায় খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সদরের আল মার্জিয়ার হোটেল মালিক আব্দুল মোতালেব জানান, এখনতো সব জিনিসের দামই চড়া। ব্যবসায় এখন আর লাভ নেই। আগে ৩০টি ডিম কিনতেন ২২০-২৪০ টাকায়, এখন সেটি কিনতে হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এদিকে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চড়া দামে কিনতে হয়। আগে যে চালের বস্তা কিনতাম ১ হ্জ্ন থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় সেটি এখন ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকায় কিনতে হয়। তাই কম দামে কোনো কিছু বিক্রি করতে পারি না।
এ বিষয়ে জামালপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, খাবারের সঙ্গে সব ভোগ্যপণ্যই জড়িত। বহির্বিশ্বের প্রভাবের কারণে চাল, ডাল, তেলসহ সব পণ্যের দাম বেড়েছে। সেজন্য হোটেল-রেস্তোরাঁর মালিকদের ওইভাবে চাপও দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি আপনার মাধ্যমে যেহেতু নজরে আসছে সেহেতু দাম যাতে যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
মো. নাসিম উদ্দিন/আরএইচ/জিকেএস