কবুতর কাঁধেই ডিউটি করেন এএসআই সাইফুল

আরিফ উর রহমান টগর আরিফ উর রহমান টগর টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১২:৪৫ পিএম, ৩০ জুন ২০২২
কবুতর কাঁধে এএসআই সাইফুল ইসলাম

শখের কবুতরকে কাঁধে নিয়েই ডিউটি করেন সাইফুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। কবুতরপ্রেমী পুলিশের এই কর্মকর্তা টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত।

বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে দেলদুয়ার উপজেলার ছিলিমপুরে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের দায়িত্ব পালনকালেও তাকে কবুতর কাঁধে নিয়েই ডিউটি করতে দেখা গেলো। পুলিশ কর্মকর্তার এমন শখ আর মাক্সি রেশ প্রজাতির ওই কবুতরটি দেখতে ভিড় জমান কৌতুহলী জনগণ।

দেখা গেলো, কবুতরটি কাঁধে নিয়েই ওই সভাস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন সাইফুল ইসলাম। জনসমাগম বেশি হওয়ায় সভাস্থলের পাশের এক মার্কেটে তার মোটরসাইকেলে বসিয়ে রাখেন কবুতরটিকে। এ সময় অনেককেই দেখা গেছে কবুতরটির সঙ্গে আনন্দ করতে।

jagonews24

উপজেলার আটিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, প্রায়ই ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে কবুতর কাঁধে নিয়ে ডিউটিরত অবস্থায় দেখা যায়। এটি দেখে সাধারণ মানুষ বেশ আনন্দ পায়। পুলিশের যান্ত্রিক জীবনযাপনে তার এই শখ সত্যিই প্রশংসনীয়।

দেলদুয়ার সদরের নুরুল ইসলাম বলেন, থানা পুলিশের এএসআই সাইফুলের কবুতর পালনের শখ আর কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেখে স্থানীয়রা বেশ আনন্দ পায়। তাকে দেখে এখন স্থানীয় অনেক তরুণও কবুতর পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

কবুতরপ্রেমী দেলদুয়ার থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মাত্র নয় মাস হলো আমি দেলদুয়ার থানায় যোগদান করেছি। দেড় বছর আগে আমার এই কবুতর পালনের শখ হয়। সেই শখ থেকেই আমি আমার ঢাকা জেলার ধামরাই থানার বাড়িতে কবুতর পালন শুরু করি। আমি রেশার জাতীয় কবুতরই পালতে পছন্দ করি। বর্তমানে আমার কাছে মাক্সি রেশার, সবজী রেশার ও ডিজেল রেশার কবুতর রয়েছে। বর্তমানে আমার কবুতর সংখ্যা ১৭ জোড়া।

jagonews24

তিনি জানান, দেলদুয়ার থানায় যোগদানের পর মাত্র তিন মাস হলো এই মাক্সি রেশার কবুতরটি পালতে শুরু করেছেন তিনি। এই উপজেলার স্থানীয় এক কবুতর ব্যবসায়ীর প্রজেক্টে মাক্সি রেশ প্রজাতির কবুতরের একটি ডিম দিই। সেই ডিম থেকেই এই কবুতরটির জন্ম হয়েছে। বর্তমানে কবুতরটির বয়স তিন মাস। পুরুষ কবুতরটি এখনও বাচ্চা, ছয় মাস বয়স হলে এটি সম্পূর্ণ রেশের উপযুক্ত হবে।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে কবুতরটি আমার এতই পোষ মেনেছে যে, সে আমার হাতের খাবার ছাড়া খায় না। আমার কাঁধে চড়ে কবুতরটি ঘুরে বেড়ালেও পোশাকে মলত্যাগ খুবই কম করে। আমারও কবুতরটি নিয়ে ঘুরতে বেশ ভালো লাগে। স্থানীয়রাও আমাকে দেখে আনন্দ পায়। এছাড়া আমার কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কোনো আপত্তি করেননি। তারাও কবুতরটি খুব পছন্দ করেন।

‘দিনের বেলায় ডিউটি পালনকালে কবুতরটিকে কাঁধে বা মোটরসাইকেলে বসিয়ে রাখলেও রাতের বেলা কোয়ার্টারে ওকে ঘরে রেখে দায়িত্ব পালন করি।’

jagonews24

কবুতরটিকে রেজা, বাজরা (ঘাসের বিচি), চিনা, কাউন, ছোলা, ডাবরি, গম, ভুট্টাসহ প্রায় ১৩ প্রকারের মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছির উদ্দিন জানান, কবুতর পালন সাইফুলের একটি শখ। ওই শখ থেকেই তিনি কবুতরটি পোষেন। কবুতরটিও আমাদের খুব ভালো লাগে। কবুতর কাঁধে থাকলেও সঠিকভাবেই দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।