সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় হামলা, পল্লী বিদ্যুতের অফিস সহায়ক নিহত
বগুড়ার শিবগঞ্জে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় গ্রাহকদের হামলায় আব্দুল হান্নান নামে পল্লী বিদ্যুতের অফিস সহায়ক নিহত হয়েছেন। এ সময় পল্লী বিদ্যুতের সহকারী মহাব্যবস্থাপকসহ (এজিএম) অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১০ জুন) রাত ১১টায় আটমূল ইউনিয়নের ভাইয়েরপুকুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল হান্নান শিবগঞ্জের পিরব পল্লীবিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শাজাহানপুর খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে।
আহতরা হলেন- পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের এজিএম রফিকুজ্জামান, লাইনম্যান মইন উদ্দিন, বিকাশ চন্দ্র সরকার, পিন্টু প্রামানিক, ফারুক হোসেন, আজিজুল হক।
এ ঘটনায় এজিএম রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। মামলায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- আটমূল ইউনিয়নের বড় বেলঘড়িয়া গ্রামের ইজার উদ্দিনের ছেলে ইমরান কাজী (৩২), চন্দনপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমান (২৮), একই গ্রামের খাজা মিয়ার ছেলে বাবর আলী (২৭), পরনান্দপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আবু সাইদ (৫০) ও তার ছেলে সোহেল রানা (২৬)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে ভাইয়েরপুকুর বাজারের ব্যবসায়ী আবু সাইদ ও অপর ছেলে আব্দুল আলিম দীর্ঘদিন ধরে ভাইয়ের পুকুর বাজারে বসত বাড়িতে ও রেজাউল করিমের একটি ক্যাবল নেটওয়ার্ক অফিস ঘরে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে। এ খবর পেয়ে উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পিরব সাব জোনাল অফিসের আওতায় ওই অফিসের জোনাল এজিএম রফিকুজ্জামান জানতে পারেন আবাসিক সংযোগকৃত বাড়িতে অবৈধভাবে মিটার বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে পল্লী বিদ্যুতের এজিএম রফিকুজ্জামান নেতৃত্বে পাঁচজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে। এতে আবাসিক ও ক্যাবল নেটকওয়ার্কের সংযোগকৃত বিদ্যুতের ব্যবহারকারীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপার্যায়ে আব্দুল হালিম, আবু সাইদ, বুলবুল ইসলাম, সোহাগ, বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
এ সময় অফিস সহায়ক আব্দুল হান্নান নিখোঁজ হন। পরে রাত ১২টায় দিকে খবর পেয়ে পুলিশ বাদলাদীঘি ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। পরে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ পিরব সাব জোনাল অফিসের এজিএম রফিকুজ্জামান বলেন, ‘আবু সাইদ ও আব্দুল আলিম এবং ক্যাবল ব্যবসায়ী রেজাউল করিম অবৈধভাবে মিটার বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য রাতেই বের হই। কিন্তু প্রতিপক্ষরা হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমাদের অফিস সহকারী নিখোঁজ হন। পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসমত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে রাতেই পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দিনগত রাত ২টায় আব্দুল হান্নানকে বাদলাদিঘী ধানক্ষেত থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাকে শিবগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।’
এসজে/এএসএম