ইউপি সদস্যের অনুসারীদের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের ওপর হামলার অভিযোগ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুক সবুজের অনুসারীদের বিরুদ্ধে একই ইউপির চেয়ারম্যানের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৬ জুন) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আহত চেয়ারম্যান হানিফ সবুজকে (৫০) উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপর আহত ইউপি সদস্য শেখ ফরিদকে বসুরহাট উপশম ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান হামলার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহত চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ দাবি করেন, সোমবার দুপুরে তার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওমর ফারুক সবুজ ও আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজের অনুসারীরা তাকে বহন করা সিএনজিচালিত অটোরিকশার গতিরোধ করেন। এরপর তাকে নামিয়ে হকিস্টিক, লাঠি, রড় ও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাতসহ পিটিয়ে হাত-পা ও বুকের হাড় ভেঙে দেন। হামলায় ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সবুজের ছোটভাই ওমর রশিদ রনি (২৪) নেতৃত্বে দেন। এসময় তার সহযোগী দুলাল, সাইফুল, প্রদীপ এবং ফখরুল ইসলাম সবুজরে ভাতিজাসহ ৯-১০ জন অংশ নেন।
এর আগে গত ১৫ মে রাত থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ফেসবুক পোস্টে ‘হা হা ইমোজি’ দেওয়া নিয়ে একই এলাকায় হামলা চালিয়ে ৫০ দোকান ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে একই ব্যক্তিরা চেয়ারম্যান হানিফ সবুজের ওপর আক্রমণ করেছেন বলে তার ধারণা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হানিফ সবুজের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ। নির্বাচনের আগে দুইজন একই গ্রুপে থাকলেও পরাজয়ের পর ফখরুল ইসলাম সবুজ কাদের মির্জার গ্রুপে যোগ দেন। ফেসবুকে ‘হা হা ইমোজি’ দেওয়া নিয়ে হামলায় ঘটনায় যে মামলা হয়েছিল সেখানে আসামি করায় ফারুক সবুজ ও ফখরুল ইসলাম সবুজের অনুসারীরা এ হামলা চালান।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমি ছেলের চিকিৎসার কাজে ঢাকায় ছিলাম। ফেরার পথে হামলার বিষয়টি শুনেছি। এতে আমার কোনো লোক জড়িত ছিল না। যদি কেউ থাকে সেটা তারা নিজেরাই বুঝবে।
অন্যদিকে, ইউপি সদস্য মো. ওমর ফারুক সবুজ বলেন, গত ১৫ মে চেয়ারম্যানের বাড়িতে সালিশে আমাদের লোকজনকে মারধরের ঘটনায় রাস্তার মাথায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা (হা হা ইমোজি নিয়ে হামলা) ঘটে। পরে মামলায় সব আসামিকে জামিনের ব্যবস্থা করি। এর পরও যদি কেউ হামলায় জড়িত থাকে তার উপযুক্ত বিচার হবে।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে গত দেড় বছর ধরে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও অপরপক্ষে ওবায়দুল কাদেরের তিন ভাগনেকে নিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। তাদের দুইপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এক সাংবাদিকসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। এসব ঘটনায় ৭০টির অধিক মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে, সোমবারের ঘটনায় আহত চেয়ারম্যান হানিফ সবুজ বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী এবং ইউপি সদস্য ওমর ফারুক সবুজ ও আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ কাদের মির্জার অনুসারী বলে জানা গেছে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এমআরআর/জেআইএম