ফায়ার ফাইটার রনির মরদেহ শেরপুরে আসছে রাতে
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৯:০২ পিএম, ০৬ জুন ২০২২
অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দেন শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের বালুঘাটা গ্রামের রমজানুল ইসলাম রনি (২৫)। প্রশিক্ষণ শেষে আট মাস আগে বিয়ে করেন।
শনিবার (৪ জুন) রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে গেঞ্জি পরেই বের হন রনি। অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও আগুন নেভানো কাজে যোগ দেন।
রোববার (৫ জুন) সকাল ১০টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন বন্ধ পান পরিবারের লোকজন। পরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিকৃত মরদেহের মধ্যে গেঞ্জি দেখে রনিকে শনাক্ত করেন স্ত্রী রূপা।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ১০ ফায়ার সার্ভিসকর্মীর একজন রমজানুল ইসলাম রনি। তিনি চরশেরপুর ইউনিয়নের বালুঘাটা গ্রামের দলিল লেখক আকরাম হোসেন আঙুরের দুই ছেলের মধ্যে বড়। তিনি সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তার এ অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। বড় সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে শেরপুর জেলা কারাগারেই স্ট্রোক করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রনির বাবা আকরাম হোসেন আঙুর। মা কামরুন্নাহার রত্না ও চাচা আবুল কাশেম মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ছুটে গেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
রনির ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম রকিব ময়মনসিংহের একটি কলেজে ডিগ্রিতে পড়াশোনা করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রনির দাদা ইউনুস আলী (৭০) জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বড় নাতি রনি। তার টাকায় তাদের সংসার চলতো। ছোট নাতিদের পড়াশোনার খরচসহ সবকিছু সে দেখতো। সেই রনিই এখন নেই। আগুনে পুড়ে মারা গেছে। আমার ছেলেটাও মিথ্যা মামলায় জেলে। কীভাবে কী করবো বুঝতে পারছি না।’
রনির চাচি বলেন, ‘বড় পুলাডার কামাই দিয়েই সংসারডা চলতো। বাপটাও মিথ্যা মামলায় জেলে। এহন আমগোর পুলাডা আগুনে পুইড়া মরে গেছে। তার লাশ আনতে গেছে। রাতে আইবো।’ বলেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন তিনি।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/এএসএম