চমেকে স্বেচ্ছাসেবক বিড়ম্বনা!
জাগো নিউজ টিম জাগো নিউজ টিম চমেক থেকে
প্রকাশিত: ০৯:৪৯ এএম, ০৬ জুন ২০২২
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে সৃষ্ট মানবিক সংকটে সব পেশার লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহায়তা দিচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিস, সেনা, আনসারসহ সরকারি সকল বিভাগের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী নানা সংগঠন। এসেছেন শিক্ষার্থী, যুবকসহ নানা পেশার মানবিক মানুষগুলো।
আহতদের উদ্ধার, হাসপাতালে আনাসহ সকল কাজে স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনকে সহযোগিতা দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী টিম। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটসহ সকল সেবাস্থলে প্রয়োজনের অধিক স্বেচ্ছাসেবীর কারণে জটলা ও বিশৃঙ্খলায় অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে উৎসুক তরুণদের ছুটাছুটি সেবার চেয়ে বাড়িয়েছে বিড়ম্বনা।
রোগী নিয়ে আসা চন্দনাইশের আমির হামজা বলেন, সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি সত্যি হৃদয়বিদারক। এখানে আহতদের সেবায় এগিয়ে আসা বড় মানবিকতার পরিচয়। কিন্তু অতিসেবায় ভোগান্তি বাড়ছে। চমেকের ইমার্জেন্সি গেট সকাল থেকে স্বেচ্ছাসেবকে ঠাসা। একটা এলাকায় কতজন লোক দাঁড়ালে সেবাটা পারফেক্ট হবে সেটা নির্ণয় না করে অল্প জায়গায় কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবক দাঁড়ানোয় জটলার মতো হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ভাতিজাকে নিয়ে এসে জটলায় পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
আমির হামজার কথার পর রাত ৮টার দিকে সেনাবাহিনী ও র্যাব এসে জরুরি বিভাগের সামনে ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবকদের সরিয়ে দিলে ভোগান্তি কমে।
এদিকে ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ হোসেন চৌধুরী।
তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান জানিয়েছেন, এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ১৬৩ জন।
শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এটার পর আরো একাধিক কন্টেইনার বিস্ফোরণ হয় বলে জানান আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা প্রশাসনের টিম। এতে কয়েকশ মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।
রাতেই আহতদের অধিকাংশকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতালেও অনেককে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মীও রয়েছেন।
এ পর্যন্ত নিহত ২১ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে জেলা প্রশাসন। এদের মাঝে রাত ১০টা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে চমেকের জরুরি বিভাগের বাইরে স্থাপনকরা সহায়তা কেন্দ্রে টানানো নোটিশ বোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহতদের দাফনে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। আহতদের প্রাথমিকভাবে দেওয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এসব টাকা চমেকে চিকিৎসাধীনরা পেলেও অন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সায়ীদ আলমগীর/ইকবাল হোসেন/এফএ/জিকেএস