এক মাস পর নিখোঁজ বোনের সন্ধান মিললো বেওয়ারিশ লাশের কবরে
প্রায় এক মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার উড়িয়ন্দ গ্রামের রাজিয়া বেগম। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাচ্ছিলেন না স্বজনরা। নিখোঁজের এক মাস পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধান পান। তবে জীবিত অবস্থায় নয়, মৃত পেয়েছেন।
রাজিয়া মারা যাওয়ার পর তার মরদেহ কবর দেওয়া হয়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেড্ডায় বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থান গিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করেন স্বজনরা। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।
শুক্রবার (৩ জুন) দুপুরে বেওয়ারিশ লাশের দাফনকারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একমাত্র সংগঠন বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজিয়া বেগম (৪০) কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার মিঠামইন ইউনিয়নের উড়িয়ন্দ গ্রামের মৃত শের আলীর মেয়ে।
রাজিয়ার ছোট ভাই জাকারিয়া জানান, গতমাসে কাজের জন্য নরসিংদীর রায়পুরায় এক আত্মীয়ের বাসায় এসে তার বোন নিখোঁজ হয়েছিলেন। এরপর থেকে অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। ওই আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারেন, রাজিয়া কাজের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া গেছেন। খবর পেয়ে তারা সরাইল উপজেলার খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে যান।
শুক্রবার দুপুরে হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেন। পরে ছবি দেখে দুই ভাই তাদের হারিয়ে যাওয়া বোনকে শনাক্ত করেন।
দুই ভাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে (মেড্ডা তিতাসপাড়ের কবরস্থান) এসে নিখোঁজ হওয়া বোনের কবরটি দেখেন। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। পরে কবর জিয়ারত শেষে তারা ফিরে যান। এ সময় বোনের পরিচয় শনাক্ত ও সুন্দরভাবে দাফনকাজ সম্পন্ন করার জন্য বাতিঘরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান দুই ভাই।
বেওয়ারিশ মরদেহের দাফন করা সংগঠন বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যত পরিচয়বিহীন মরদেহ উদ্ধার হয়ে হাসপাতাল মর্গে আসে, তাদের দাফনকাজ আমরা করি। এ পর্যন্ত আমরা অর্ধশতাধিক পরিচয়হীন মরদেহ দাফন করেছি।
পুলিশ ও বাতিঘর সূত্র জানায়, বুধবার (১ জুন) রাতে বিজয়নগরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে একটি পরিবহনের চাপায় অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী মারা যান। ওই নারী সরাইল বিশ্বরোড থেকে বিজয়নগরের চান্দুরায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর ওই নারীর আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে মরদেহের দাফনকাজ করেন বাতিঘরের সদস্যরা। ওই নারীই হারিয়ে যাওয়া রাজিয়া।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এএসএম