হত্যার ১৭ দিন পর গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার


প্রকাশিত: ০৯:০৫ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

যৌতুক এবং পরকীয়া প্রেমের বলি হলেন গৃহবধূ শারমিন আক্তার (২৫)। হত্যার ১৭ দিন পর শারমিনের লাশ উদ্ধার করেছে গোসাইরহাট থানা পুলিশ। এ ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুর জেলা গোসইরহাট উপজেলার পূর্ব মাছুয়াখালী গ্রামে। এ ব্যাপারে গোসাইরহাট থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার নারকেলী কানুরগাঁও গ্রামের শাহ আলম চৌকিদারের মেয়ে শারমিন আক্তারের সঙ্গে বিল­াল হোসেন লস্করের বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই বিল­াল হোসেন যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে এবং মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন করে। কখনো কখনো স্বামী বিল­াাল হোসেন লস্করের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শারমিন আক্তার বাবা শাহ আলম চৌকিদারের কাছ থেকে টাকা এনে দিতেন। তাতেও তিনি খ্যান্ত হয়নি।

এর মধ্যে শারমিন আক্তারের সঙ্গে অন্য একটা ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা বিয়েতে রূপ নেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। এ ব্যাপারটি বিল­াল আঁচ করতে পেরে শারমিনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শারমিন আক্তারকে আবারও যৌতুকের জন্য চাপ দেয় এবং শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গত ৫ জানুয়ারি গভীর রাতে শারমিনকে শারীরিক নির্যাতন করে গলা টিপে হত্যা করে।

পরে বিল­ালের বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার উত্তরে জব্বার মাদবরের পরিত্যক্ত শুকনা পুকুরের মাঝে শারমিনের মরদেহটি মাটি চাপা দেয়। শারমিনকে না পেয়ে তার মা জাহানারা বেগম ১১ জানুয়ারি গোসাইরহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এএসপি গোসাইরহাট (সার্কেল) সুমন দে ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে গোসাইরহাট পুলিশ বিল­াল লস্করকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী আজ দিবাগত রাত ১টার দিকে মরদেহের স্থান সনাক্ত করা হয়। পরে সকালে মাটির নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে গোসাইরহাট থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

শারমিন আক্তারের মা জাহানারা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে বিল­াল লস্কর গলা টিপে মারছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

শারমিনের চাচাতো ভাই নান্নু চৌকিদার বলেন, যৌতুক না দেয়ার কারণে আমার বোনের সঙ্গে কথা কাটকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিল­াল আমার বোনকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে।।

এএসপি গোসাইরহাট (সার্কেল) সুমন দে বলেন, গতকাল শারমিনের স্বামী বিল­াল লস্করকে গ্রেফতার করেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ হত্যা মামলার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা হবে।

ছগির হোসেন/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।