পানিতে ভাসছে ৩০ কোটি টাকা


প্রকাশিত: ০৭:৫২ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

পদ্মা নদীর পাকশী এলাকায় পানির উপর জেগে ওঠা লোহার বিশাল খণ্ড অপসারণের ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বোমার আঘাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত এশিয়ার অন্যতম বড় রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজের স্প্যানের একটি অংশ এটি। শুধু লোহা হিসেবেই এর দাম প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের পাকশী বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, জেগে ওঠা স্প্যানটি পানি থেকে তোলার জন্য যেসব উপকরণ দরকার তার কোনটিই বর্তমানে রেলওয়ের নেই।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে সেতু প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজে মোট ১৫টি স্প্যান আছে। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ১ হাজার ২৫০ মে.টন। প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩৬০ ফুট। বিশাল আকৃতির এই স্প্যানটি নদী থেকে টেনে তোলার মত যন্ত্রপাতি বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেই। ফলে স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও সেটি তোলা সম্ভব হয়নি অথবা উদ্যোগও নেয়া হয়নি। ধীরে ধীরে স্রোতের টানে এটি সেতু থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সরে গেছে।

সেতু প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

অপর এক সূত্র জানায়, এই স্প্যানটিতে যে পরিমাণ লোহা আছে তার আনুমানিক মূল্য হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। যার নির্মাণ মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

জেগে ওঠা স্প্যান সম্পর্কে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ২২/২৩ দিন আগে নদীর লক্ষ্মীকুন্ডা প্রান্তে নদীতে মাছ ধরার সময় জেলেদের জাল পানির নিচে আটকে যায়। এ সময় কয়েকজন জেলে ডুব দিয়ে জাল ছাড়াতে গেলে বড় ধরনের একটি লোহাজাতীয় বস্তুর অস্তিত্ব পান। কয়েকদিন পর পানি আরো নেমে গেলে বড় আকৃতির একটি লৌহখণ্ড জেগে ওঠে। এর ২/৩দিন পর আরো দুটি লোহার অংশ দেখা যায়। এরপর প্রতিদিন বহু মানুষ এগুলো দেখতে নদী তীরে ভিড় করছেন। অনেকে নৌকা নিয়ে দেখতে যাচ্ছেন।

অধিকাংশ মানুষই ধারণা করছেন, এই লৌহখণ্ডগুলো হার্ডিঞ্জ ব্রিজের স্প্যানের অংশ যা মুক্তিযুদ্ধের সময় বোমার আঘাতে ভেঙে পড়েছিল। এটি ছিল ১২ নম্বর স্প্যান। স্বাধীনতার পর ভারত সরকার নতুন করে এই স্প্যানটি নির্মাণ করে দিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল চালু করে দেয়। নদীতে পানি কমে যাওয়ায় চারিদিকে চর জেগে উঠেছে। ফলে বিশাল আকৃতির এই স্প্যানের অংশ জেগে উঠেছে।

আলাউদ্দিন আহমেদ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।