প্রটোকল সহকারে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে পুলিশ জানতে পারলো তিনি শ্রমিক
নাম বিপ্লব প্রধান। বয়স ৪০। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় একটি গ্রিল ও আলমারি তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। এই পরিচয় লুকিয়ে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরেন।
পুলিশ তাকে প্রটোকল দিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। এর আগে ঢাকা থেকে ফেরার পথে বিভিন্ন সুবিধাও নেন তিনি। তবে পুলিশ তাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে জানতে পারে তিনি আসলে বিচারক নন, একজন শ্রমিক। পরে তাকে আটক করে পুলিশ।
শুক্রবার (২০ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর দিঘলদী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে প্রতারণার অভিযোগে ওই বক্তিকে আটক করা হয়।
অভিযুক্ত বিপ্লব প্রধান ওই গ্রামের মৃত মাহাবুব প্রধানের ছেলে। তিনি উপজেলা সদরের কলেজ গেট এলাকায় একটি গ্রিল ও আলমারি তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেকে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ বলেও দাবি করেন বলে স্থানীয়রা জানান।
পুলিশ জানায়, নিজেকে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয় দিয়ে ঢাকা থেকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় রওনা দেন বিপ্লব প্রধান। পথে বিভিন্ন জায়গায় বিচারপতির প্রটোকল সুবিধা নেন। দাউদকান্দি পেরিয়ে এলে কুমিল্লা পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, একজন বিচারপতি তার নিজ বাড়িতে আসছেন। তাকে পুলিশ প্রটোকল দেওয়ার জন্য মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে জানানো হয়।
পরে পুলিশ বিপ্লব প্রধানকে প্রটোকল দিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। তবে স্থানীয়দের কাছে পুলিশ জানতে পারে বিপ্লব প্রধান বিচারপতি নন। পরে সেখান থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হযন। পথে পুলিশের কাছে এসে নিজেকে বিচারপতি বলে পরিচয় দেন। পরে থানার চারজন অফিসারকে তার বাড়িতে পাঠানো হলে তারা বাড়ির পরিস্থিতি এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারেন, তিনি বিচারপতি নন। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
ওসি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি নিজেকে ভুয়া বিচারপতি পরিচয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিপ্লব প্রধান এর আগেও এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। কয়েক বছর আগে নিজেকে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ বলে দাবি করেন। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার ব্যবহার করতেন।
নজরুল ইসলাম আতিক/এসআর/জেআইএম