২৫ মণের ‘রাজা বাবু’র দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচ লাখ
কোরবানির পশুহাটে এবার নজর কাড়বে বিশালাকৃতির ষাড় ‘রাজা বাবু’। হলেস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ‘রাজা বাবু’র ওজন ২৫ মন। দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচ লাখ টাকা। রাজা বাবুকে দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছে।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার অরণকোলা গ্রামে ‘ওয়ান স্টপ ক্যাটল র্যান্স’ ডেইরি ফার্মে প্রায় ১০০ ষাড় গরু পালন করা হচ্ছে। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা এসব গরুর মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘রাজা বাবু’।
ওয়ান স্টপ ক্যাটল র্যান্স ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া সোহান জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজা বাবু’ এবার কোরবানির ঈদের জন্য স্পেশাল। তাকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাজা বাবুকে দিনে দুবার গোসল, নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ানো ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। আশা করছি রাজা বাবুকে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব আরও চারটি ডেইরি ফার্ম রয়েছে। এসব ফার্মে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় শত শত গরু রয়েছে। শুধু কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য আলাদাভাবে ১০০ গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব গরু দেড় লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি হবে।’
সরাসরি বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনেও এসব গরু বিক্রি করে ওয়ান স্টপ ক্যাটল র্যান্স ডেইরি ফার্ম। করোনার কারণে গত দুই বছর অনলাইনে সবচেয়ে বেশি গরু বিক্রি হয়েছে।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘এবার করোনার প্রাদুর্ভাব কম থাকায় ক্রেতারা সরাসরি ফার্মে এসে দেখেশুনে গরু কিনবেন। এজন্য আমরা আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
ঈশ্বরদীর অরণকোলা উত্তরাঞ্চলের অন্যতম পশুর হাট হিসেবে পরিচিত। অরণকোলা গ্রামে প্রায় ৫০টি ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠেছে। এসব ডেইরি ফার্মে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার গরু পালন করা হয়। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিটি ডেইরি ফার্ম এখন কোরবানির গরুতে ভরপুর।
অরণকোলা গ্রামের আলমগীর হোসেন আলম বলেন, অরণকোলার কিছু মানুষ অর্ধশত বছর ধরে গরুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সাল থেকে গরু ব্যবসার ধরন পাল্টে গেছে। গত তিন বছরে এখানে প্রায় ৫০টি ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠেছে। আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে নির্মিত এসব ডেইরি ফার্মে প্রতি বছর হাজার হাজার গরু লালন পালন করা হয়। ঈদকে সামনে রেখে এসব ডেইরি ফার্মে বড় বড় গরু পালন করা হয়েছে।
আলো ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মাহাবুবুল হক আলো জাগো নিউজকে বলেন, অরণকোলার ডেইরি ফার্মগুলোতে সব ধরনের গরু পাওয়া যায়। গরু কিনতে এসে কেউ এখান থেকে ফেরত যান না। এক ফার্মে পছন্দ না হলে অন্য ফার্মে গিয়ে পছন্দ হয়। অরণকোলা এতদিন গরুর হাটের জন্য বিখ্যাত ছিল। এখন ডেইরি ফার্মের জন্যও পরিচিতি পেয়েছে।
কোরবানির পশু পালনকারী ডেইরি ফার্মগুলোর ব্যাপারে সবসময় খোঁজখবর রাখা হচ্ছে জানিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, বিশেষ করে অরণকোলা হাট ও হাটের পার্শ্ববর্তী ডেইরি ফার্মগুলো সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য একজন টেকনিশয়ান রয়েছেন। খামারিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গরুর প্রজনন, বিনামূল্য ও স্বল্পমূল্যে ঘাস কাটার মেশিন, ভ্যাকসিন, ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এসআর/জিকেএস